সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ০৫:১৪ পূর্বাহ্ন

নদী ভাঙন রোধে দৌলতপুরে নেওয়া হচ্ছে আগাম ব্যবস্থা

নদী ভাঙন রোধে দৌলতপুরে নেওয়া হচ্ছে আগাম ব্যবস্থা

ফরিদ আহম্মেদ, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:: প্রতিবছরই দেখা যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিভিন্ন এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙনের চিত্র। এবারে ভাঙনের আগেই আগাম ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। স্থায়ী ব্যবস্থা না হলেও পদ্মা নদীর ভাঙন প্রবণ প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে ফেলা হচ্ছে জিও ব্যাগ। যার ফলে নদী ভাঙন রোধ হবে বলে আশা করছে প্রশাসন। তবে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চায় এলাকাবাসীরা।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার প্রমত্তা পদ্মার ভাঙনের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলা থেকে ভুরকাপাড়া পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকা। বিগত কয়েকবছর ধরেই এই এলাকা ভাঙনের মুখে পড়ে।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) আগাম প্রস্তুতি হিসাবে জিও ব্যাগ দিয়ে ডাম্পিং কার্যক্রম শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন। এর ফলে মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলা পাড়া ও ভুরকা থেকে রাইটা পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকার হাজার হাজার মানুষের বসতভিটা ও আবাদী জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারী-বেসরকারী অনেক স্থাপনা রক্ষা পাবে।

নদী ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা শুরু হওয়ায় উপজেলার নদীপারের মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। তবে তারা স্থায়ী ব্যবস্থার পাশাপশি আসছে বর্ষার আগেই দ্রুত কাজ শেষ করার দাবী করেন।

নদী ভাঙন রোধে দৌলতপুরে নেওয়া হচ্ছে আগাম ব্যবস্থা

জানা যায়, প্রতিবছর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, চিলমারী, ফিলিপনগর ও মরিচা এই ৪টি ইউনিয়নের পদ্মা নদীতে পানি বাড়লে বন্যা হয়। ফলে অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়াসহ নদী ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উন্নয়ন বাজেট থেকে ২টি প্রকল্পের মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা ব্যায়ে ভাঙন কবলিত এলাকা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হাটখোলাপাড়া থেকে ভুরকা পর্যন্ত ডাম্পিং করার পরিকল্পনা হাতে নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। ডাম্পিং এর জন্য প্রায় ২ লক্ষ ৩৫ হাজার পিচ বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজের উদ্বোধন করা হয়।

মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলাপাড়া গ্রামের কৃষক আজিম সরদার বলেন, এই কাজ শেষ হলে এলাকাবাসীর অনেক উপকার হবে। হাজার হাজার মানুষের কৃষি জমিসহ মহিষকুন্ডি-রাইটা বাধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষা পাবে। রকি আহমেদ বলেন, পদ্মা নদীর ভাঙনে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী দীর্ঘদিনের। জিও ব্যাগ দিয়ে বাধ নির্মানের পাশাপাশি স্থায়ী ব্লক দেয়ার দাবী জানান তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মান নিয়ন্ত্রক সহকারী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া রিফাত জানান, কাজের যথাযথ মান যেন ঠিক থাকে তার জন্য কাজ ঢাকা ও কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন রোর্ডের বিশেষজ্ঞরা কাজ করছে। জিও ব্যাগ, বালির মান ও পরিমানসহ সকল উপকরণ পরীক্ষা করার পরই তা ডিম্পিং কাজের জন্য জিও ব্যাগ নদীতে ফেলার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রোকননুজ্জামান জানান, স্থায়ী বাধ না হলেও ভাঙন রোধে এই জিও টিউব কার্যকরী হবে। বর্ষার আগেই এ কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন জানান, নদী রক্ষায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মরিচা ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ নদীভাঙন থেকে থেকে রক্ষা পাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com