বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩০ অপরাহ্ন

ভৈরবে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

মো. আল আমিন টিটু, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী উদ্যোক্তার কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা ফারজানা আহমেদ সুমনা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে এই সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী নারী উদ্যোক্তা নিলুফা জাহান লিপি ও তার স্বামী।

আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে শহরের কমলপুর হাজী হোটেল এণ্ড রেস্তোরাঁয় এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নারী উদ্যাক্তা নিলুফা জাহান লিপি বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে কাপড়ের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একই ভবনে বসবাস করার সুবাদে বাংলাদেশ রেলওয়ে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা ফারজানা আহমেদ সুমনার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে ওই শিক্ষিকা লিপিকে এক কবিরাজের কাছে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন ধরণের ঝাড়ফুঁক করান। পরবর্তীতে তাকে ধর্মের মেয়ে বানিয়ে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেন। ফলে তার প্রতি গভীর বিশ্বাসের সুযোগ তৈরি করে প্রথমে “উৎসব গ্যালারি” ব্যবসার কথা বলে আড়াই লাখ টাকার কাপড় নেন। পরবর্তীতে ‘স্বপ্ন আউটলেট’ নামে একটি নতুন ব্যবসা শুরু করার কথা বলে এবং সেই ব্যবসায় ৩০ শতাংশ পার্টনাশীপের প্রলোভন দেখান। এই প্রলোভনে তার কথায় বিশ্বাস করে প্রবাসী স্বামীর পাঠানো পোস্ট অফিসের এফডিআর ভেঙে ১০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার বিক্রি করে আরও ২০ লাখ টাকাসহ মোট ৩০ লাখ টাকা ওই শিক্ষিকার হাতে তুলে দেন। ফলে তাদের মধ্যে ৩০ লাখ টাকার একটি ব্যবসায়িক চুক্তি হয়। এর কিছুদিন পর ওই শিক্ষিকা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে কয়েক মাসের জন্য আরও ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা লাগবে জানান এবং ব্যাংক থেকে এক কোটি টাকা লোন পেলে সব টাকা ফেরত দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন। পরে ওই নারী উদ্যোক্তা বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সুদের বিনিময়ে আরও ৭০ লাখ টাকা এনে দেন শিক্ষিকা ফারজানাকে। কিন্তু কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন ফারজানা আহামেদ ও তার স্বামী শামীম আহমেদ ভূঁইয়া ভৈরবের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে একইভাবে প্রতারণা করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই টাকা ফেরত চাইলে তারা উল্টো মিথ্যা মামলা ও হুমকি দিয়ে ভয় দেখায়।

ভুক্তভোগী নারী উদ্যোক্তার অভিযোগ, পাওনা টাকা ফেরত চাইলে শত শত তারিখ দিয়ে দেই দিচ্ছি বলে গড়িমসি করে সময় পাড় করেন। সর্বশেষ তিন মাসের সময় নিয়ে ২০২৪ সালের ১৮ এপ্রিল শিক্ষিকার নামের ব্যাংক একাউন্টের ৭০ লাখ টাকার একটি চেক দেন লিপিকে। কিন্তু ২১ এপ্রিল ব্যাংকে চেক নিয়ে গেলে জানতে পারেন তার অ্যাকাউন্টে কোনো টাকাই নেই। ফলে চেকটি ডিজঅনার হয়। পরবর্তীতে ১৯মে ২০২৪ সালে ওই শিক্ষিকাকে উকিল নোটিশ পাঠায় এবং ২০২৫ সালে কিশোরগঞ্জ আদালতে ৭০ লাখ টাকার চেক ডিজঅনারে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩৭১/২৫।

সাংবাদিকরা অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশের রেলওয়ে স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা ফারজানা আহমেদ সুমনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আদালতের মাধ্যমে সবকিছুর ফায়সালা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com