শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:২১ পূর্বাহ্ন

বদরগঞ্জে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ ইটভাটা

আফরোজা বেগম, বদররগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃঃ
রংপুরের বদরগঞ্জে প্রশাসনের নাকের ডগায় ড্রাম চিমনি দিয়ে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে লোকালয়সহ তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে পড়েছে। এলাকার লোকজন দুর্ঘটনার আশঙ্কাায় দিনাতীপাত করলেও প্রশাসন বলছে সম্পূর্ণ অজানা।
জানা যায়, উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের বালাপাড়া সংলগ্ন স্থানে ওই ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। ওই ইটভাটার মালিকের নাম আবেদ আলী। তার বাড়ী ওই বালাপড়ায়। ইটভাটা থেকে উৎপাদিত ইটের ট্রেডমার্ক দেয়া হয়েছে ‘এএসবি’। ওই ইটভাটাটি পাড়া ঘেঁষেই স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে ওই ইটভাটায় পুরোদমে ইট পোড়ানোর কাজ চলছে।
গতকাল মঙ্গলবার(২৩জানুয়ারি) সরেজমিন এলাকা পরিদর্শণকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার লোকজন বলেছেন- দিনরাত দুর্ঘটনার আশঙ্কায় থাকতে হচ্ছে। কারণ এমনিতেই ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। তার উপর পাড়া ঘেঁষেই ড্রাম চিমনি স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে বালাপাড়ার কয়েকশ’ মানুষ তো বটেই বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আউলিয়াগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আউলিয়াগঞ্জ হাইস্কুলের দু’ সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থীও হুমকির মুখে পড়েছে। অথচ আবেদ আলীর প্রভাবে কেউ ‘টু’ শব্দটি করতে পারছেন না।
এব্যাপারে জনতে চাইলে উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী বলেন, একটি ইটভাটা স্থাপন করতে হলে কয়েকটি শর্ত অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যয়নপত্র, কৃষি অফিসের প্রত্যয়নপত্র, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রত্যয়নপত্র, জেলা প্রশাসকের অনুমতিপত্র। আর এসব নিতে গিয়ে একজন ইটভাটা মালিককে অবশ্যই জিগজাগ ইটভাটা করতে হবে। সেই ইটভাটায় অবশ্যই নীতিমালা অনুযায়ী একজন প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে চিমনী স্থাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে ড্রাম চিমনি স্থাপনের কোন প্রশ্নই আসেনা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধুমাত্র এএসবি ইটভাটা নয় উপজেলার অনেক ইটভাটা নীতিমালা অনুসরণ করে স্থাপন করা হয়নি। একারণে ইটভাটা ব্যবসায়ীদের বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তিনি বলেন, যেসব ইটভাটা নীতিমালা মেনে স্থাপন করা হয়নি সেসব ইটভাটা এখনই বন্ধ করা উচিত।
মধুপুর ইউপিচেয়ারম্যান আয়নাল হক বলেন, আবেদ আলীকে জিগজাগ ইটভাটা স্থাপন করার জন্য প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছি। কিন্তু তিনি যে ড্রাম চিমনি দিয়ে ইটভাটা চালাবেন সেটা আমার জানা ছিলনা।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুবর রহমান বলেন, কৃষি অফিসের কাছে শুধুমাত্র জানতে চাওয়া হয় ইটভাটায় ব্যবহৃত জমিতে বছরে ক’টি ফসল উৎপাদিত হয়। বাকী সমস্ত প্রক্রিয়ার সাথে পরিবেশ অধিদপ্তর জড়িত।
এব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুরের উপপরিচালক মেহবাহুল আলম বলেন, ড্রাম চিমনির ইটভাটা চালানোর কোন সুযোগ নেই। তারপরও কিভাবে ওই ইটভাটা চলছে তা’ সিরিয়াসলি দেখা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করে ওই ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com