মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন
রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃঃ
বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া এলাকার চিকলী নদী থেকে অবৈধভাবে শ্যালো মেশিন বসিয়ে দেড় বছর ধরে বালু উত্তোলন করছেন জিয়াউর রহমান নামে এক ব্যক্তি। এতে আশেপাশের আবাদী জমি ধ্বসে যাচ্ছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে একাধিক লিখিত অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন অভিযুক্ত জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে। তবুও থেমে নেই বালু লুটেরা জিয়াউর রহমানের অবৈধ কার্যক্রম।
সরেজমিন এলাকা পরিদর্শনকালে কথা হয় ইদ্রিস আলী মন্ডলের সাথে। তিনি বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলনের কারণে আমার আবাদী জমি ধ্বসে যাচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য ১০দিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে ধর্না দিচ্ছি। কিন্তু তারা সেখান থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পারছেন না। এভাবে চলতে থাকলে আমার আবাদী জমির অনেক ক্ষতি হবে। দেখা গেছে-ওই নদীর তিন’শ ফুটের মধ্যে চারটি শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের তদারকি করছেন রাসেল নামের এক যুবক। তিনি বলেন, শ্যালো মেশিন ভাড়া এনে জিয়াউর রহমান বালু উত্তোলন করছেন। তার অনুস্থিতিতে আমি দেখভাল করছি। সেখানে কাজ করতে দেখা যায় আরো সাতজনকে। এর মধ্যে একজন শ্যালো মেশিন মালিক। অন্যরা শ্রমিক। শ্যালো মেশিন মালিক মোকসেদ আলীর বাড়ি রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর গ্রামে। তিনি বলেন, আমাকে জিয়াউর রহমান ভাড়ায় এনেছেন। প্রতি বড় ট্রলি বালু উত্তোলন করে জিয়াউর রহমান ১৫০ টাকা দেন আমাকে। তিনি (জিয়াউর রহমান) সেই বালু বিক্রি করছেন ৫০০টাকায়। স্থানীয়রা জানান, দেড় বছর ধরে বালু উত্তোলন করছেন জিয়াউর। প্রতিদিন একেকটি শ্যালো মেশিন থেকে ২০ থেকে ৩০ ট্রলি বালু বিক্রি করেন। একেকটি শ্যালো মেশিন থেকে তার কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হয়। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে মামলা করলে ওই মামলায় তিনি হাজত খেটে বেরিয়ে এসে আবার বালু উত্তোলন করছেন। রাধানগর ইউনিয়নের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা রঞ্জিত কুমার রায় বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইউএনও স্যারের নির্দেশে জিয়াউর রহমানকে বালু তুলতে নিষেধ করেছিলাম। তিনি নিষেধ অমান্য করায় আমি বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে বালু উত্তোলন আইনে বদরগঞ্জ থানায় পর পর দুইটি মামলা করি। ওই মামলায় তিনি হাজত খেটেছেন। তবে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবার তিনি বালু উত্তোলন করছেন। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। অভিযুক্ত জিয়াউর রহমান বলেন, ‘নদী থেকে বালু উত্তোলনে কারো ক্ষতি হচ্ছে না। তবুও প্রশাসন আমার বিরুদ্ধে থানায় দুইটি মামলা দিয়েছে। আমি সেই মামলা আদালতে মোকাবেলা করছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল হক বলেন, এবারে জিয়াউর রহমনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’