মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩৭ অপরাহ্ন

সড়ক দূর্ঘটনায় দুই বন্ধুর নির্মম মৃত্যু, পরিবারে চলছে শোকের মাতম

নিহত দুই বন্ধু সামিউল ও ইমন।

নিজস্ব প্রতিবেদক:: প্রায় চারশত কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি জমিয়ে বাড়ির কাছে এসেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সামিউল ও ইমন। দু:সাহসিক যাত্রায় দুই বন্ধুর মৃত্যু হলো একই সাথে। তাদের এই করুন মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের মাতম। গত ১৬ অক্টোবর বন্ধুদের সাথে ১৮টি মোটরসাইকেল যোগে দু’জন কক্সবাজার বেড়াতে যায়।

বাড়ি ফেরার পথে সোমবার (২০ অক্টোবর) ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মারা যায় কলেজ ছাত্র সামিউল ও ইমন। ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে স্বজনরা বার বার মূর্ছা যাচ্ছে। সোমবার রাত ১১ টায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নিমতলায় অপরদিক থেকে আসা একটি ট্রাকের ধাক্কায় দু’জনে মারা যায়।

নিহতের স্বজনরা জানায়, ঢাকার নবাবগঞ্জের কলাকোপা ভৌরাহাটির লিয়াকত আলীর ছেলে সামিউল ও তার আরেক বন্ধু সিরাজদিখানের শেখরনগর এলাকার ইমন ভূইয়া বন্ধু মহলের সাথে গত বৃহস্পতিকবার মোটরসাইকেল নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমনে যায়। কক্সবাজার থেকে সোমবার রাতে বাড়ি ফেরার পথে রাত ১১টায় বন্ধুকে তার শেখরনগর গ্রামের বাড়ি পৌছে দিতে যায় সামিউল। এসময় নিমতলা এলাকায় পৌছলে একটি ট্রাকের চাপায় পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সামিউল ও বন্ধু ইমন। পরে স্থানীয়রা তাঁদেরকে উদ্ধার করে। তাঁদের পরিচয়পত্র দেখে ঠিকানা নিশ্চিত হয়ে পরিবারকে জানায়। পরে গভীর রাতে গিয়ে তারা লাশ উদ্ধার করে। বন্ধুকে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগে। এসময় বিপরীতদিক থেকে আসা অপর আরেকটি ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় তারা।

কলাকোপার প্রবাসী লিয়াকত শেখের ছেলে সামিউল (১৯)। সে সরকারী দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলো। কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলেকে হারিয়ে উভয় পরিবারেই চলছে শোকের মাতম। এদিকে ইমন ভূইয়া (২০) শেখরনগর ঘনশ্যামপুর এলাকার সেন্টু ভূইয়ার ছেলে।

সরেজমিনে সামিউলের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, দাদা আব্দুল বারেক উঠানে বসে কান্না করছে। লাশবাহী গাড়ীর পাশে স্বজনরা ভীড় করছে। মা বীনা আক্তার দোতলা ভবনের একটি কক্ষে বসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে। স্বজনরা পাশে বসে সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করলেও একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বীনা বার বার মূর্ছা যাচ্ছে। কোনো সান্ত্বনাই তাঁকে বারণ করতে পারছে না। যারা আসছে তাঁকে দেখেই হাউ মাউ করে কেঁদে উঠেন তিনি। বুক চাপড়ে মা বীনা বলছে কি জবাব দিবো কুয়েত প্রবাসী স্বামীকে।

সামিউলের চাচা নুরুল ইসলাম বলেন, একমাত্র আদরের ছেলেকে শখ করে মোটরসাইকেল কিনে দেয় বাবা মা। কিন্তু কে জানে সেই মোটরসাইকেলই তার জীবনে কাল হয়ে দাড়াবে।

এ বিষয়ে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ওসি আবু নাঈম সিদ্দিকী বলেন, তাৎক্ষনিক সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করি। পরে পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। তবে অজ্ঞাত ট্রাকটিকে তারা সনাক্ত করতে পারেননি এখনো।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com