সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৮ অপরাহ্ন

ভ্রাম্যমান আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে ভালুকায় আনন্দ মেলা

আবুল বাশার শেখ, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:: ময়মনসিংহের ভালুকায় ঘনবসতিপূর্ণ হবিরবাড়ীতে করোনা সংক্রমণের মধ্যেও সরকারি বিধি-নিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্বেও ১২ দিন ব্যাপী চলছে ওরশের নামে আনন্দ মেলা। করোনার ঝুকিপূর্ণ এলাকার এই মেলায় প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীদের সমাবেশ ঘটছে। রাত ব্যাপী চলছে গান-বাজনাও।

মহামারী করোনা’র এই ভয়াবহ সংক্রমণের ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারী অফিস আদালতে কঠিন বিধিনিষেধ থাকলেও কোন প্রকার বিধি-নিষেধ মানছেনা মাজার কর্তৃপক্ষ। যেখানে করোনাকালিন সময়ে সরকারী অফিসসহ সর্বত্র সরকারের কঠোর বিধি নিষেধের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেখানে এই মেলা কিভাবে চলছে? করোনাকালিন সময়ে ভালুকার স্থানীয় প্রশাসন মাঝে মাঝেই স্ব-উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন, ইতিমধ্যে বহু ব্যক্তিকে জরিমানাও করা হয়েছে সরকারী বিধি নিষেধ ও স্বাস্থ্য বিধি না মানা ও মাস্ক না পরার কারনে।

সেখানে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘোষণা দিয়ে ওরশের নামে ১২ দিনব্যাপী চলছে আনন্দ মেলা। মেলা বন্ধের জন্য স্থানীয় প্রশাসন থেকে নির্দেশ দিলেও এসব বিধি নিষেধে কোন তোয়াক্কাই করছেনা মেলার আয়োজকগণ। প্রশ্ন উঠেছে মেলা বন্ধে প্রশাসনের নমনীয় মনোভাব নিয়ে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন কোথায় তাদের খুঁটির জুর? এতো ক্ষমতা তারা কোথায় পেলো? আয়োজকদের ক্ষমতার উৎস কি? সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার করোনায় ঝুকিপূর্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ হবিরবাড়ী ইউনিয়নের আমতলী এলাকায় আব্দুল গফুর মৌলভীর মাজারের বাৎসরিক ওরশের নামে ১৫ দিন ব্যাপী আনন্দ মেলার আয়োজন করেছেন মাজার কর্তৃপক্ষ। মেলায় প্রায় দুই শতাধিক বিভিন্ন ধরনের দোকান বরাদ্দ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মাজারের পীর আব্দুর রউফ ফকির জানান, আমাদের ওরশ মুলত ৩দিন। ফেব্রুয়ারী মাসের ১৩/১৪/ ও ১৫ তারিখ, সেমতে আমরা ৫ দিনের অনুমতিও পেয়েছি। আরেক পীর শাহাবুদ্দিন ফকির তিনি বলেন, আমরা এবছর মেলার অনুমতি পেয়েছি ১০ দিনের, যদিও তাৎক্ষণিক তারা মেলার অনুমতির কোন প্রকার অনুমতিপত্র দেখাতে পারেনি।

এব্যাপারে সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আব্দুল্লাহিল-বাকিউল বারী জানান গত বুধবার বিকালে ভ্রাম্যমান আদালত এর মাধ্যমে মাজার কর্তৃপক্ষকে মেলা বন্ধের জন্য কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি তার পরেও যদি তারা মেলা চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, এমনিতেই হবিরবাড়ী ইউনিয়নটি গণবসতিপূর্ণ এলাকা, মেলায় হাজার হাজার মানুষের সমাবেশের ফলে হবিরবাড়ী সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সরকারী অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সর্বত্র যেখানে কঠোর বিধি নিষেধ রয়েছে, সেখানে ওরশের নামে এই মেলা কিভাবে এতোদিন চললো সেটা আমার বোধগম্য নয়। প্রশাসনের এই বিষয়টি কঠিন ভাবে দেখা উচিৎ। সরকারি বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে এই মেলা কিভাবে চলছে? করোনা মহামারী এলাকায় ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com