বৃহস্পতিবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৭ পূর্বাহ্ন
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকায় দুই মাস বয়সী এক ছেলে সন্তানকে ৪০ হাজার টাকায় প্রতারক চক্রের কাছ থেকে ক্রয় করার অভিযোগ উঠেছে এক হিজড়ার বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া ইম্প্রেসিভ মোড় এলাকার ইউসুফ আলী ওরফে বইদ্দার বাড়ীতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে হিজড়া সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য। স্থানীয় একটি প্রতারক চক্রের কাছ থেকে ঐ হিজড়াদের একজন গত বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) একটি ছেলে সন্তান ক্রয় করেছেন। ওই শিশুর মা পরিচয় দানকারি প্রতারক চক্রের সদস্য আত্মগোপনে রয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হিজড়া মোছাঃ রুবিনা ওরফে সোহাগীর ঘরে এক ফুটফুটে নবজাতক ঘুমিয়ে আছে। কোথা থেকে কিভাবে এ নবজাতককে আনা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে হিজড়া সোহাগী বলেন, আমি নবজাতককে দত্তক এনেছি, নবজাতকের মা আমার কাছে দত্তক দিয়েছে। আমি তাকে চিকিৎসা করার জন্য কিছু টাকা দিয়েছি। শিশু ছেলের মায়ের ঠিকানা ও পরিচয় জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোন ঠিকানা ও পরিচয় দিতে পারেনি সে।
আরেক হিজড়া সাথী বলেন, জামিরদিয়া তুলার বাপের মসজিদ সংলগ্ন এলাকার আবু সাঈদের বাসার ভাড়াটিয়া স্থানীয় একটি ফ্যাক্টরীর শ্রমিক মোঃ শাহ আলমের সাথে এই বাচ্চাটির মা মোছাঃ লিমা আক্তারের ছয় মাস পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের ছয় মাস পরে লিমা আক্তার একটি ছেলে সন্তান প্রসব করে, সন্তান প্রসবের পরে স্বামী শাহ আলম ও তার পরিবার সন্তানটি তাদের না বলে অস্বীকার করেন, সন্তানটি বিয়ের পূর্বেই গর্ভে ছিলো বলে স্বীকার করে লিমা আক্তার। কিছু দিন পরেই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়, লিমা আক্তার গরিবের মেয়ে স্বামী ও নেই সন্তান পালনের খরচও জোগাতে সমস্যা হচ্ছিলো পরে আমাদের কাছে দত্তক দিয়ে দেশে চলে গেছে। অপর আরেক হিজড়া রাসেল ওরফে নদী বলেন, এইটা জারজ সন্তান বাবার পরিচয় নাই তার মা কিভাবে ছেলেকে লালন-পালন করবে তাই আমাদের কাছে চুক্তি নামা করে দত্তক দিয়ে দেশে চলে গেছে।
এলাকার অনেকেই জানান, শুনছি হিজড়া সোহাগী ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেলে সন্তান কিনে এনেছে। তবে এলাকায় বাচ্চাটির মা ও বাবাকে খোঁজে পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসির অভিযোগ বাচ্চাটি প্রতারক চক্র বিক্রি করেছে। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন- বাচ্চাটির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য হিজড়াদের কাছ থেকে উদ্ধার করে ভালো কোন পরিবারের কাছে হস্তান্তরের ব্যবস্থা করতে প্রশসানের হস্তক্ষেপ জরুরী।
এ ব্যাপারে ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা খাতুন বলেন, আমি এ বিষয়ে আগে শুনিনি, আমি বিষয়টি দেখে শিশুটিকে উদ্ধার করার ব্যবস্থা করছি।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মাহমুদুল ইসলাম জানান, বিষয়টি শুনেছি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।