বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন
বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি::
আমার স্কুল আমার গর্ব। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা যেন ভুল করেও লেখা পড়া থেকে পিছিয়ে না পড়ি। দেশ বিদেশে আলোকিত মানুষ হিসাবে লেখাপড়ার কোন বিকল্প নেই। যে কোন সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ এখন সব বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ভ’মিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। ২ মার্চ শুক্রবার দেশের উত্তর-পশ্চিঞ্চালের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যাপীঠ আড়ানী মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের গৌরোবজ্জল ১৫০তম (সার্ধশত) বর্ষপূর্তি উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে একথা বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, প্রাচীন বিদ্যাপীঠ হিসেবে সাফল্যের স্বাক্ষর রাখায় আড়ানী মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়কে জাতীয় করণের তালিকাভ’ক্ত করেছে সরকার। আগামীতে এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী। তিনি আরো বলেন বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পা দিতে যাচ্ছে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক প্রফেসর হাসান আজিজুল হক বলেন শিক্ষা ব্যবস্থায় শেষ লক্ষ্য বলে কিছু নেই। শিক্ষার সাথে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা জড়িত আছে। সেই ব্যবস্থা আছে কিনা সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে।
দুইদিন ব্যাপী মিলন মেলার উৎসব আয়োজনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা (রাজশাহী-৫),সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ (নাটোর-১)। ¯œৃতিচারনমূলক আলোচনায় ‘¯œৃতি অম্লান’ ‘আমার স্কুল ও আমরা’এর উপর বক্তব্য রাখেন ১৯৭৪ সালের প্রাক্তন ছাত্র প্রাথমিক ও গনশিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ১৯৫৫ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র প্রফেসর (সাবেক অধ্যক্ষ) মোসলেম উদ্দীন,৬৬ সালের আজাদ আলী বীর প্রতীক,আড়ানী পৌর মেয়র মুক্তার আলী। উপস্থিত ছিলেন ১৯৪৯ সালের প্রাক্তন ছাত্র হারুনুর রশিদ, দুর্নীতি দমন কমিশনের ডেপুটি ডাইরেক্টর আহসান আলী,বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল হাকিম. মোজাম্মেল হোসেন,অবসরপ্রাপ্ত মেজর আলতামাচসহ রেজিষ্ট্রেশনকৃত বিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন ৩হাজার শিক্ষার্থী ছাড়াও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকবৃন্দ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্চয় কুমার দাসের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্যকালে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রতœতত্ব অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক সফিকুল ইসলাম (মুকুট)জানান, রাজশাহী জেলা থেকে বাঘা উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। উপজেলা শহর থেকে আরও প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে আড়ানী পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত আড়ানী মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয়। রাজশাহীর প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি আড়ানী মনোমোহিনী উচ্চ বিদ্যালয় । রাজা পরেশ নারায়ন রায় আড়ানীসহ আশপাশের অধিবাসীদের শিক্ষার জন্য তার স্ত্রী রানি মনোমোহিনীর নাম করণে ১৮৬৫ সালে আড়ানীতে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করেন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় আট’শ জন। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে ও সুসজ্জিত সুবিশাল ক্যাম্পাসে স্কুলটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অংগনেও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। জমির পরিমান ১২.৫ বিঘা। জীবিত ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন পেশায় কর্মরত রয়েছে। সকলের স্বতফ’র্ত অংশগ্রহনে সার্ধশত বর্সপূর্তি অনুষ্ঠান মিলন মেলায় পরিনত করেছে।
জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ২দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ,বর্তমান ছাত্র ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের নিয়ে বর্নাঢ্য র্যালি এলাকার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। অতিথিদের ফুল ছিটিয়ে ও নৃত্যের মাধ্যমে বরণ করে নেয় একঝাঁক খুদে নৃত্যশিল্পী। নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের ২ দিনের এই মিলনমেলায় সতীর্থদের পেয়ে আবেগে আল্পূত হয়েছেন, অনেকে হেসেছেন, কেঁদেছেন, উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। মধ্যাহৃ বিরতির পর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় শিল্পী ও দেশ বরেণ্য শিল্পীদের সংগীতানুষ্ঠান।