বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন
ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দৃষ্টিনন্দন রূপ–লাবণ্যেভরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে পাম গাছগুলোর সৌন্দর্যে নয়ন ভরে যেত। পামগুলো যাদের চোখে পড়ত, তাদের চোখ আটকে যেত পামগাছগুলোর সৌন্দর্যে। এখন সেই পাম গাছগুলোই মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
গৌরীপুর পৌর শহরের উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ ও হারুনপার্ক এলাকায় পামবিথী সড়কের দুপাশের জমিদার আমলের প্রাচীন পামগাছগুলো দিনদিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। সড়কের পামগাছগুলোর মধ্যে কিছু গাছ কিছু গাছ মরে গেছে, কিছু গাছের গুড়ি ক্ষয়ে গেছে, মাটি না থাকায় কিছু গাছের শিকড় আলাদা হয়ে গেছে। এই অবস্থায় ঝড়-বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে গাছ পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গৌরীপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী ১৯২৫/৩০ সালের দিকে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিদেশ থেকে গাছগুলো এনে সড়কের দুপাশে রোপণ করেন। গাছগুলো বড় হওয়ায় সাথে সড়কের দুপাশে সৌন্দর্য বাড়তে থাকে। প্রকৃতি ও ভ্রমণ পিপাসু মানুষজন গাছগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে ঘুরতে আসেন। কিন্ত প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় শতবর্ষী এই গাছগুলো এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পামবিথী সড়কের জোড়াদীঘির পাড়ে বঙ্গবন্ধু চত্বরে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার মুর্যা ল, মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনা বিজয় একাত্তর। এছাড়াও এই পামবিথী সড়ক হয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গৌরীপুর মহিলা ডিগ্রি (অনার্স) কলেজ, অগ্রদূত নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন স্থানে পথচারী, স্কুল শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পামগাছগুলোর কারণে সব সময় মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক বিরাজ করে।
গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, বয়সের ভারে পামগুলো মরে যাচ্ছে। আবার কিছু গাছ অর্ধমৃত। প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে গাছগুলো ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু চত্বরের কয়েকটি পামগাছ মরে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। দুর্ঘটনা এড়াতে মৃত গাছ অপসারণে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
প্রবীণ সাংবাদিক সুপ্রিয় ধর বাচ্চু বলেন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ঘেঁষে ঝুঁকিপূর্ণ পামগাছগুলো দাঁড়িয়ে আছে। বৈরী আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে গাছ পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা মনে করে গাছগুলো দ্রুত কাটার প্রয়োজন মনে করছে সচেতন মহল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ গাছ থাকলে জনস্বার্থে পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ গাছ কাটতে পারে। বঙ্গবন্ধু চত্বরের ঝুঁকিপূর্ণ পামগাছগুলো পৌরসভায় অবস্থিত। পৌর কর্তৃপক্ষ চাইলে প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাটতে পারেন।