মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:২৩ অপরাহ্ন
কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি:: ঢাকার কেরানীগঞ্জে সড়কের পাশে স্থাপন করা যুবদলের একটি রাজনৈতিক তোরণ ভেঙে পড়েছে বিআরটিসির একটি দ্বিতল যাত্রীবাহী বাসের সামনে। এতে মুহূর্তেই বাসের যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কদমতলী গোলচত্বর এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙা তোরণটির কাঠের ফ্রেম ও বাঁশ সড়কের পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তোরণটি ভেঙে পড়ায় প্রায় আধাঘণ্টা সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে ট্রাফিক পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ভেঙে পড়া কাঠামো সরিয়ে ফেললে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কদমতলী গোলচত্বর এলাকায় দায়িত্বরত ছিলেন ঢাকা জেলা দক্ষিণ ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক সোনিয়া আক্তার। তিনি বলেন, তোরণটি অপসারণের জন্য আগেই দলীয় নেতাদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা কোন ব্যবস্থা নেননি। সম্ভবত বাঁশ পচে যাওয়ার কারণেই এটি হঠাৎ ভেঙে পড়ে। পরে ট্রাফিক পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় সেটি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাসখানেক আগে তোরণটি সড়কের মাঝের বিভাজক এবং সড়কের অপর প্রান্তের বাঁশ ও কাঠ গেঁথে নির্মাণ করা হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিসির এক বাসচালক বলেন, তোরণটি থাকার কারণে গাড়ি চালাতেও অসুবিধা হতো। রাজনৈতিক তোরণ হওয়ায় কেউ কিছু বলার সাহস পেত না।
বিআরটিসির বাসে থাকা নাজমা আক্তার বলেন, কদমতলী থেকে পল্টনে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি বিশাল এক কাঠামো বাসের সামনে পড়ছে। সবাই আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে। পরে বুঝতে পারলাম এটি একটি রাজনৈতিক তোরণ। তিনি আরও বলেন, অল্পের জন্য বেঁচে গেছি। রাজনৈতিক তোরণ সড়কের পাশে স্থাপন করা মানে মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলা।
পথচারী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতিদিন অফিসের কাজের জন্য এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। হঠাৎ দেখি, মাথার ওপর থেকে একটা বিশাল তোরণ ভেঙে পড়ছে। কয়েক সেকেন্ড দেরি হলে আমার ওপরই পড়ত। এখনো ভয় পাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, সড়কে যেভাবে রাজনৈতিক দলের তোরণ ও ব্যানার টানানো থাকে, তাতে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কদমতলী গোলচত্বর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, কদমতলী ও এর আশপাশের এলাকায় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ব্যানার ও পোষ্টারে ছেঁয়ে গেছে। তাঁরা বিভিন্ন সময়ে নতুন ব্যানার পোষ্টার দিয়ে সড়কের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা ছেয়ে ফেলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবদলের এক নেতা বলেন, আমাদের অনেক নেতা-কর্মী এখন রাজনীতি করছে শুধু লোক দেখানো প্রচারের জন্য। তারা দু:সময়ে দলের কার্যক্রমে ছিলেন না। তাই তারা দলের ভাবমূর্তি ও মানুষের চলাচল নিয়ে ভাবে না। বর্তমানে তোরণ, ব্যানার ও পোস্টার বানানো একটা প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। আমি মনে করি, দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষার জন্যও এসব নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
আগানগর ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত হোসেন সানি বলেন, দলীয় ব্যানারগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। যেসব জায়গায় ব্যানার স্থাপন করলে মানুষের অসুবিধা হয় সেগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকবো। যাতে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা না হয়।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাহিদ মামুন বলেন, তোরণটি পুরোনো ছিল। সেটি সরানোর জন্য দল নির্দেশ দিয়েছিল। হঠাৎ ভেঙে পড়ায় দলীয় কর্মীরা দ্রুত তা সরিয়ে ফেলেছে। এতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।