শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৩০ অপরাহ্ন

লালমনিরহাটে ভয়াবহ শীলাবৃষ্টি: উঠতি ইরি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি॥
লালমনিরহাটের উপর দিয়ে আবারো বয়ে গেছে ভয়াবহ শীলাবৃষ্টি। উঠতি ইরি বোরো ধানের ক্ষেত, ভূট্টাসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত লন্ডভন্ড হয়ে ব্যাপক ক্ষতিতে চিন্তিত কৃষক পরিবার।
বুধবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে বৃষ্টির সাথে টানা ১০/১৫ মিনিট পর্যন্ত শীলার আঘাত হানে গোটা লালমনিরহা জেলায়।
স্থানীয়রা জানান, গোটা লালমনিরহাট জেলা সকাল থেকেই আকাশ কালো মেঘে ঢেঁকে যায়। পরে দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হয়। দুপুর না গড়াতেই হঠাৎ বাতাসের সাথে শীলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় টানা ৮/১০ মিনিট ধরে শীলার আঘাত হানে। এটা কোথাও কোথাও এ শীলা বৃষ্টি ১০/১৫ মিনিট স্থায়ী ছিল।
ফলে উঠতি ইরি বোরা ধান ও ভুট্টা ক্ষেত লন্ড ভন্ড হয়ে মাটিতে নুয়ে পড়েছে। নষ্ট হয়েছে চাষির বিভিন্ন সবজির ক্ষেত। সব মিলে কৃষক পরিবারকে সর্বশান্ত করেছে এ শীলাবৃষ্টি।
এ শীলাবৃষ্টিতে সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলা। পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার কয়েকটি স্থানে শীলাবৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে। তবে গত মাসের শেষ দিনের ভয়াবহ শীলাবৃষ্টিতে সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ ছিল এ দুই উপজেলা।
কালীগঞ্জ উপজেলার সুকান দীঘি এলাকার স্কুল শিক্ষক শাহ আলম জানান, ভয়াবহ এ শীলাবৃষ্টিতে এ অঞ্চলের উঠতি ইরি বোরো ধান, ভূট্টা ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাকা ধান শীলের আঘাতে মাটিতে ঝড়ে পড়েছে। সবজি ক্ষেতের ডালপালা ফুল ও ফল ঝড়ে পড়েছে শীলার আঘাতে। বিশেষ করে শীলের আঘাতে এ অঞ্চলের আম গাছের প্রায় সব আমেই ঝড়ে পড়েছে।
আদিতমারী উপজেলার বনচৌকী এলাকার কৃষক নাজিমুদ্দিন জানান, আর মাত্র কয়েক দিন গেলেই ধানগুলো ঘরে তোলা যেত। এমন সময় আধাপাকা ধান শীলার আঘাতে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। তাদের এলাকায় সকালেও একবার শীলাবৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
একই উপজেলার কমলাবাড়ি এলাকার সবজি চাষি আব্দুল করিম জানান, এ শীলাবৃষ্টিতে শসা, কড়লা, ঝিঙ্গে, চাল কুমড়াসহ সকল ধরনের সবজি ক্ষেতের অভাবনীয় ক্ষতি হয়েছে। সবজি গাছের ডালপালা ও গাছ ছিড়ে নষ্ট হয়েছে অপরিপক্ক সবজি। হঠাৎ করে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে অত্র এলাকার সবজি চাষীরা অনেক ক্ষতির মুখে পড়বে বলে তিনি জানান।
এর আগে গত মার্চ মাসের শেষ দিনে লালমনিরহাটে আরও একবার ভয়াবহ শীলাবৃষ্টির কারনে জেলার অর্ধশতাংশ ঘরবাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়ে। সেই ধকল না কাটতে আবারো এ শীলাবৃষ্টিতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন অত্র জেলার কৃষকসহ সাধারন মানুষজন।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, শীলাবৃষ্টির বিষয়ে ইউএনও এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com