রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:: রোগীকে সঠিক চিকিৎসা না করে অন্যত্র রেফার্ড করা ও কর্মকর্তার দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ এনে তাঁর অপসারণের দাবিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে নবাবগঞ্জ উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা।
সোমবার দুপুর ১২টায় নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে তারা এ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে। এসময় ছাত্র-জনতা নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এসএম সাখাওয়াত হোসেনের অপসারণ দাবি করেন।
জানা গেছে, গত রোববার মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আরমান নামে এক তরুণ গুরুতর আহত হয়ে নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। এসময় তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করে। পরে ঢাকা যাওয়ার সময় রাস্তায় সে মারা যায়। এছাড়া গত ৮ জুলাই রাত সাড়ে ১০ টায় এক রোগীকে স্যালাইন দেয়া হয়। তাঁর হাতে রক্ত আসছে এ কথা জানানোর পরও দায়িত্বরত নার্সরা সেখানে যায়নি। পরে সে রোগী মারা যায়। এ ধরনের নানা অভিযোগ জানতে পেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা সোমবার সকাল ১১ টায় সাধারণ জনতার ব্যানারে নবাবগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়। তাঁরা বৃষ্টি উপক্ষো করেই একটি মিছিল নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। এরপর মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এসএম সাখাওয়াত হোসেনের অপসারণ দাবি করে স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক শাকিল আহমেদ বলেন, সাধারণ মানুষের টাকায় যাদের বেতন হয় সেই চিকিৎসকরা রোগীর সেবা না দিয়ে তাঁদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। কথায় কথায় রোগী ঢাকায় রেফার্ড করেন। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রোগীরা ভর্তি আছে। সময় মতো নার্সের সেবা এবং ওষুধ পায় না। বেশীর ভাগ ডাক্তার দুপুর একটা বাজতেই প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখেন। প্রধান কর্মকর্তা রাজনৈতিক প্রভাব দেখান। উপস্থিত সংবাদকর্মীদের কাছে এসব অভিযোগ করেন আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা। পরে তাঁরা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদত্যাগ ও নানা অনিয়ম বন্ধে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত করাসহ ৭ দফা দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।
নবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়মের অভিযোগ, চিকিৎসকের অপসারণ দাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ
এদিকে হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষায় সকাল থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। নবাবগঞ্জ থানার ওসি মমিনুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ শান্ত আছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা নেই।
নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এসএম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি কোনো প্রভাব বিস্তার করেননি। রোগীদের সেবা দিতে সার্বিক চেষ্টা করছেন। এছাড়া ৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রায় শতাধিক রোগী ভর্তি নিয়েও তিনি হতাশা প্রকাশ করেন। জনবলসহ নানা সমস্যা আছে বলে স্বীকার করেন। এর মধ্যে থেকেই তিনি ও চিকিৎসকগণ রোগীদের সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান।