শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ করলো ২৯০ রান। এবারও সিকান্দার রাজার সেঞ্চুরি এবং অপরাজিত ১১৭ রান তার সঙ্গে সেঞ্চুরি করলেন অধিনায়ক রেগিস চাকাভাও। আজও জোড়া সেঞ্চুরি জিম্বাবুয়ের কাছে বাংলাদেশ এক ম্যাচ হাতে রেখেই হারলো হারারেতে। রবিবার ৭ আগস্ট হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৫ বল বাকি রেখে তারা জিতেছে ৫ উইকেটে। বাংলাদেশের ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে করা ২৯০ রান তারা টপকেছে জোড়া শতকে।
৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে জিম্বাবুইয়ে।
সিকান্দার রাজা টানা দ্বিতীয় শতক ও অধিনায়ক রেজিস চাকাবভা ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাঁকিয়েছেন। জিম্বাবুয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয়।
তাই জিম্বাবুইয়ে ৪৭.৩ ওভারে ৫ উইকেটে তোলে ২৯১ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে এর আগে ৬ বার সিরিজ জিতেছে জিম্বাবুইয়ে। হাজার হাজার দর্শক প্রত্যক্ষ করল শক্তিশালী ওয়ানডে দল হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশকে কীভাবে মাটিতে নামিয়ে আনলেন সিকান্দার রাজা আর রেজিস চাকাভা। এ যেন প্রথম ম্যাচেরই পুনরাবৃত্তি। বাংলাদেশর দেওয়া বড় টার্গেট তাড়ায় নেমে শুরুতে বিপর্যয়; পরে দারুণ জুটিতে পৌঁছে যাওয়া জয়ের বন্দরে। লম্বা সময় পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে হারল বাংলাদেশ।
২০১৩ সালের পর হারল প্রথম ওয়ানডে সিরিজ। প্রথম ওয়ানডেতে সিকান্দার রাজা ও ইনোসেন্ট কাইয়ার সেঞ্চুরি এবং তাদের ১৯২ রানের জুটিতে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার রাজা ও রেজিস চাকাভার সেঞ্চুরি ও তাদের ২০১ রানের জুটিতে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে গেল জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের ২৯০ রান ৫ উইকেট ও ১৫ বল হাতে রেখে পেরিয়ে গেল স্বাগতিকরা।
টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন রাজা। তার ১২৭ বলের দারুণ ইনিংসটি গড়া চারটি ছক্কা ও আটটি চারে। আগের ম্যাচে ৪৩ রানে জীবন পেয়ে শেষ করে এসেছিলেন ম্যাচ। এবার ৪২ রানে জীবন পেয়ে সারলেন বাকিটা।
আরও একবার দেখিয়ে দিলেন অভিজ্ঞতার মূল্য কতটা বেশি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষদিকে কিছুটা পুষিয়ে দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাট করা লিটন দাস নেই ইনজুরির কারণে, এমানুল হক বিজয় হাত খোলার আগেই হয়ে গেলেন রানআউট, বাংলাদেশের স্কোরকে কে একটা সম্মানজনক অবস্থায় এনে দাঁড় করাবেন?
ররিবার ৭ আগস্ট হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জেতার জন্য জিম্বাবুয়ের দরকার ২৯১ রান। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভার ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকদের সামনে এই লক্ষ্য দিয়েছে টাইগাররা।
মাঝে সøগ সুইপ করতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসেন মুশফিকুর রহিমও। ১ চারে ৩১ বলে ২৫ রান করেন তিনি। নাজমুল হোসেন শান্ত ক্রিজে ছিলেন অনেক্ষণ। মনে হচ্ছিল চার বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পাবেন তিনি।
কিন্তু তার ধীরগতির ৫৫ বলে ৩৮ রানের ইনিংস থামে মাদাভিরার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিলে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও খেলছিলেন অনেকটা একই রকম ইনিংস। যদিও শেষদিকে কিছু বাউন্ডারে হাঁকিয়ে রানের সঙ্গে বলের পার্থক্য কমিয়েছেন তিনি। তবুও বাউন্ডারি হাঁকাতে তার ভোগান্তি, রান নিতে কষ্ট ফুটে উঠেছে স্পষ্ট।
এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুব এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ জুটি বাধেন। ৮১ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন তারা দু’জন। আফিফ দারুণ খেলছিলেন। ৪টি বাউন্ডারি মেরে রানকে ৪১ – এ নিয়ে যাওয়ার পর সিকান্দার রাজার বলে চিভাঙ্গার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।
৫৫তম ওয়ানডে খেলতে নেমে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক পান চাকাবভা মাত্র ৭৩ বলে। এরপরই তাকে বিদায় করে জুটি ভাঙ্গেন মেহেদি হাসান মিরাজ। বিধ্বংসী চাকাবভা ৭৫ বলে ১০ চার, ২ ছয়ে ১০২ রানে বিদায় নেন। তবে সিকান্দার আবারও অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৪৭.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ২৯১ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় জিম্বাবুইয়ে।
ব্যাটে-বলে দুরন্ত সিকান্দার ১২৭ বলে ৮ চার, ৪ ছয়ে ১১৭ রানে অপরাজিত থাকেন। আগের ম্যাচেও সিকান্দারের অপরাজিত শতকে ৫ উইকেটে জয় পায় জিম্বাবুইয়ে। সর্বশেষ ৫টি সিরিজে জিম্বাবুইয়েকে একটি ম্যাচও জিততে দেয়নি বাংলাদেশ। অর্থাৎ দুদলের মধ্যে হওয়া ৫টি সিরিজের সগুলোতেই জিম্বাবুইয়ে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। সবমিলিয়ে তাদের বিপক্ষে ১২টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এবার জিম্বাবুইয়ে ঘুরে দাঁড়াল টানা দুই ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ে সিরিজের ট্রফি নিশ্চিত করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর ॥ বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৯০/৯ (তামিম ৫০, এনামুল ২০, শান্ত ৩৮, মুশফিক ২৫, মাহমুদউল্লাহ ৮০*, আফিফ ৪১, মিরাজ ১৫, তাসকিন ১, তাইজুল ৬, শরিফুল ১; ইভান্স ৭.৪-০-৬৪-০, নিয়াউচি ৮-০-৩৯-১, চিভাঙ্গা ৮.২-০-৪৯-১, রাজা ১০-০-৫৬-৩, মাধেভের ৯-০-৪০-২, জঙ্গুয়ে ৭-০-৪০-০)
জিম্বাবুয়ে: ৪৭.৩ ওভারে ২৯১/৫ (মারুমানি ২৫, কাইটানো ০, কাইয়া ৭, মাধেভেরে ২, রাজা ১১৭*, চাকাভা ১০২, মুনিয়োঙ্গা ৩০*; মাহমুদ ০-০-০-০, মিরাজ ০-০-০-০, শরিফুল ০-০-০-০, তাসকিন ০-০-০-০, তাইজুল ১০-০-৪৮-১)
ফল : জিম্বাবুইয়ে ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ সিকান্দার রাজা (জিম্বাবুইয়ে)।
সিরিজ : ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে জিম্বাবুইয়ে।