রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:২৪ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম বন্দর ইসলামী শ্রমিক সংঘের পরিবহন বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

শওকত আলম, চট্টগ্রাম থেকে:: চট্টগ্রাম বন্দর ইসলামী শ্রমিক সংঘের উদ্যোগে পরিবহন বিভাগীয় সম্মেলন-২০২৫ গত ১৬ আগস্ট ২০২৫ তারিখে সংগঠনের নিজস্ব কার্যালয় প্রাঙ্গণে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। প্রধান বক্তা ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি এস. এম. লুৎফর রহমান।

নেতৃবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে বন্দর উন্নয়ন ও শ্রমিক কল্যাণে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে গত এক বছরে পদোন্নতি প্রদান ও বিশেষ উৎসাহ বোনাস চালুর উদ্যোগকে তাঁরা অবিস্মরণীয় অবদান হিসেবে উল্লেখ করেন। শ্রমিক-কর্মচারীরা চেয়ারম্যানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

সম্মেলনে পরিবহন বিভাগের হাজারো শ্রমিক ও কর্মচারীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ঘটে। উপস্থিত শ্রমিকরা তাঁদের জীবনমান উন্নয়ন এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উপস্থাপন করেন।

অবিলম্বে সি.বি.এ নির্বাচন দিতে হবে। আন্তর্জাতিক বন্দর মানদণ্ডে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। অবিলম্বে শূন্য পদে নিয়োগ দিতে হবে। পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালে নিয়োজিত আর.এস.জি.টি’র সাথে চুক্তি পুনঃমূল্যায়ন করতে হবে এবং দেশের স্বার্থে ডকুমেন্টেশন ও কালেকশন বন্দরের হাতে রাখতে হবে। অবিলম্বে এনসিটি পরিচালনার জন্য উন্মুক্ত দরপত্র (OTM) পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করতে হবে। দেশের স্বার্থবিরোধী প্রতিষ্ঠান (ডিপি ওয়ার্ল্ড) এর সাথে কোনো চুক্তি শ্রমিকরা মেনে নেবে না। বোর্ড সভায় অনুমোদিত পোর্ট ডিউটি ভাতা ১০,০০০ টাকা এবং ঝুঁকিভাতা বেসিকের ৪০% বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিবছর বন্দর দিবসে ১০% লভ্যাংশ সমহারে বণ্টন করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য ৯০ দিনের ইনসেনটিভ বোনাস চালু করতে হবে।অপারেশন কর্মচারীদের শিফটিং ভাতা ৫০০ টাকা দিতে হবে। ব্যাংক কর্মচারীদের ন্যায় বন্দর শ্রমিকদের জন্য লাঞ্চ ভাতা জনপ্রতি প্রতিদিন ৪০০ টাকা প্রদান করতে হবে। সরকার অনুমোদিত গৃহ নির্মাণ ঋণ চালু করতে হবে।শ্রমিকদের জন্য পূর্বের ন্যায় রেশনিং প্রথা পুনরায় চালু করতে হবে।

সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, বন্দর হলো দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা। এই বন্দরের শ্রমিকরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশের রাজস্ব বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিলে তাঁদের কাজের উদ্দীপনা আরও বেড়ে যাবে।

সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াছিন বলেন,আমরা কখনোই দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো চুক্তি মেনে নেব না। শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই বন্দর আরও গতিশীল ও আধুনিক বন্দরে রূপ নেবে।

প্রধান অতিথি এস. এম. লুৎফর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর শুধু বন্দর নয়, এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রধান চালিকাশক্তি। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ করা হলে তাঁরা আরও আন্তরিক হয়ে কাজ করবে, আর তার সুফল ভোগ করবে গোটা দেশ।

সম্মেলনের মাধ্যমে বন্দর শ্রমিকরা একমতভাবে ঘোষণা দেন যে, শ্রমিক স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত তাঁরা মেনে নেবেন না এবং শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com