বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ১০:৩৪ অপরাহ্ন

ইসলামপুরে বন্যায় পানিবন্দি ২ লাখ মানুষ: সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

লিয়াকত হোসাইন লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি॥

যমুনা নদীর পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের ইসলামপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যমুনার পানি বেড়ে বুধবার সন্ধ্যায় বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে প্রতিদিনই যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ শাখা নদীর পানি বেড়ে নদী তীরবর্তী এলাকা ছাড়াও বিস্তৃর্ণ জনপদে পানি ছড়িয়ে পড়ছে। উপজেলার অন্তত ৮টি ইউনিয়ন পৌরসভার প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বসতবাড়ি, ফসলি জমি, নলকুপ বন্যার পানিতে তলিয়ে দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি, খাবার ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট। প্রথম দফার বন্যায় পাওয়া ত্রাণ সহায়তা ফুরিয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বন্যা দুর্গতরা সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন উচু বাঁধ, সেতু এবং সড়কে আশ্রয় নিয়েছে। দুর্গত পশ্চিমাঞ্চলের পানি উঠে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের মোরাদাবাদ, খানপাড়া, জারুলতলা, মোজাআটা, বানিয়া বাড়ি আমতলী বাজার, গুঠাইল বাজার,সদর ইউনিয়নের পচাবহলা, পাচবাড়িয়া, কুলকান্দি, বেলগাছা, সাপধরী ৭টি ইউনিয়নে নৌকা ছাড়া কোথায় যাবার ব্যবস্থা নেই। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি।

বুধবার দুপুরে স্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রাম আর নদী একাকার হয়ে গেছে। নদীর দুই পাড়ের গ্রামগুলো যেন পানিতে ভাসছে। কারো বাড়িতেই রান্না করে খাবার জো নেই। বলিয়াদহ শিংভাঙ্গ পাকা সড়কে শেষ মাথায় কোমর সমান পানিতে নিমজ্জিত রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন শিংভাঙ্গা গ্রামের শতাধিক পরিবার। শিংভাঙ্গা গ্রামের আজগর আলী, আব্দুল্লাহ, মতি শেক ও আজাহার আলীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিদিন কাজ করে ভাত খাই। কাজ নাই ভাত নাই। ঘরের মাঝে বানের পানি উঠছে। পানির কারণে কাজও নাই। তাই তিন দিন ধরে চিড়া মুড়ি আর নদীর পানি খেয়েই জীবন বাচাচ্ছি। একই অবস্থা এ গ্রামের শতাধিক পরিবারের।

উলিয়া বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানের সামান্য শুকনা পাকা সড়কে গরু বাছুর ও হাস মুরগিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু সামগ্রী নিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অসহায় মানুষ।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড জামাল আব্দুন নাছের বাবুল জানান, দ্বিতীয় দফা বন্যায় আমরা ত্রান বিতরন শুরু করেছি। ৪৬টি আশ্রয়ন কেন্দ্র খুলেছি। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। আমরা দূর্গতদের মাঝে চাল, শুকনো খাবার, গো খাদ্য ত্রানসামগ্রী পৌছাতে প্রতি নিয়তই কাজ করে যাচ্ছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com