বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন

অপহরণের ২ দিন পর মা-মেয়ে উদ্ধার

রূপগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধি॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে অপহরণের দুই দিন পর গত মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় তারাব এলাকার বিশ্বরোড থেকে মা-মেয়েকে উদ্ধার করেছে ভুলতা ফাঁড়ির পুলিশ।

থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, গত রোববার (২১ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার মাহনা এলাকায় মঞ্জু ফকিরের বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসার পর অপহরনের ঘটনা ঘটে। অভিযোগে জানা যায়, মঞ্জুর বাড়ির ভাড়াটিয়া লাভলী বেগম (৩৫) মেয়ে লামিয়াকে (৯) দুপুর ২টার দিকে ফোসকা খাওয়াতে রাস্তায় আসলে অজ্ঞাত অপহরনকারীর দল কালো একটি মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। অপহরনের পর লাভলী বেগমের মোবাইল দিয়েই স্বামী ইমারত তালুকদারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে অপহরণকারীরা। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে তারা। কোন উপায় না পেয়ে এ ঘটনায় ইমারত থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানা পুলিশ ভুলতা ফাঁড়িকে দায়িত্ব দিলে ভুলতা পুলিশ অপহিতদের উদ্ধারে অভিযান চালায়। পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে তারা তারাব নোয়াপাড়া এলাকায় থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে। পুলিশের নজরদারি খবর টের পেয়ে অপহরণকারীরা আটকের দুইদিন পর অপহরণকৃত মা-মেয়েকে বিশ্বরোড এলাকায় চোখ মুখ বেধে ফেলে পালিয়ে যায়। পথচারীরা রাস্তার পাশে চোখ মুখ বাধা অবস্থায় লামিয়া ও লাভলী বেগমকে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে লাভলী ও লামিয়াকে উদ্ধার করেন।

উদ্ধারকৃত লাভলী বেগম জানান, তাদের বাড়ি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার মুচকুরনী এলাকায়। তার স্বামীর নাম ইমারত তালুকদার। সে মাহনা এলাকায় স্বামী ও মেয়ে লামিয়াকে নিয়ে মঞ্জু ফকিরের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সেখানে থেকে স্থানীয় ভি-নেট গার্মেন্টেসে চাকুরী করতেন। স্বামী ইমারত তালুকদার অন্তিম টেক্সটাইল মিলের নাইট গার্ডের চাকুরী করেন। গত (২১ অক্টোবর) রোববার ডিউটি শেষে স্বামী ইমারত ঘুমিয়ে থাকে। বেলা দুুপুরের দিকে মেয়ে ফোসকা খেতে চাইলে মেয়ে লামিয়াকে নিয়ে ফোসকা খাওয়াতে রাস্তায় আসে। এমন সময় পিছন থেকে দুইটি লোক তাদের কাছে আসে এবং মুখের সামনে কাপড় ঘুরাইয়া নেয়। এরপর আমাদের একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তবে কোথায় নিয়েছে বলতে পারিনা। সেখানে নিয়ে আমাকে একটি বাড়ির দোতলায় হাত পা বেধে রাখে ও মেয়ে লামিয়াকে নিচ তলায় রাখে। পরে আমার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মোবাইল দিয়ে আমার স্বামীর কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। এরপর আমাকে বলে তোর স্বামী টাকা না দিলে তোদের মেরে ফেলা হবে। কিন্তু আমি যখন বলি আমার স্বামীর এত টাকা নেই। তখন তারা ১ লাখ টাকা দিতে বলে। এভাবে ২দিন আটক রাখে। তবে মঙ্গলবার ৫টার দিকে আমাকে ও লামিয়াকে চোখ মুখ বেধে তারাব বিশ্বরোড এলাকায় ফেলে পালিয়ে যায়। রাস্তার পাশে পথচারীরা আমাদের পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে চোখ মুখ খুললে আমরা ঠিকানা বলি। তখন ভুলতা ফাঁড়ি পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

ভুলতা ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সেপেক্টর মোঃ রফিকুল হক জানান, অপহরনকারীদের বিকাশ নাম্বার দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা তাদের অবস্থান নির্ধারণ করি। অপহরণকারীরা উপায়ান্ত না পেয়ে লামিয়া ও লাভলি বেগমকে ২দিন আটকের পর তারাব বিশ্বরোড এলাকায় রেখে পালিয়ে যায়। পথচারীরা বিশ্বরোড এলাকায় চোখমুল বাধা অবস্থায় একটি শিশু ও একজন মহিলাকে দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেয় পরে তাদের উদ্ধার করি। তিনি আরো বলেন ইদানিং এলাকায় অপহরণকারীর একটি চক্র খুবই সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের ধরার জোর প্রচেষ্টা চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com