মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ড বিক্রিসহ পাঁচ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সেবা বন্ধ করতে যাচ্ছে। আগামী ৩০ নভেম্বর থেকে প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে এ সেবা বন্ধ হবে। পরবর্তী সময়ে ঢাকার বাইরে অন্যান্য বিভাগীয় কার্যালয়েও একই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে।
বন্ধ হতে যাওয়া সেবাগুলো হলো-
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাউন্টারে এসব সেবা আর না মিললেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে আগের মতোই সব সেবা পাওয়া যাবে। এতে গ্রাহকদের ভোগান্তি যেন না হয়, সে জন্য ব্যাংকগুলোকে তদারকি জোরদার করা হবে। পাশাপাশি সেবা পরিবর্তন বিষয়ে জনগণকে অবহিত করতে প্রচারণাও চালানো হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ে ২৮টি কাউন্টারের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র, প্রাইজবন্ড ও নগদ লেনদেনসহ মোট ১০ ধরনের সেবা দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভবনের আধুনিকায়ন, নিরাপত্তা জোরদার, স্বয়ংক্রিয় ভল্ট ব্যবস্থা এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নীতিমালা (কেপিআই) অনুসরণে কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে পাঁচ ধরনের সেবা দেওয়া ১২টি কাউন্টার ৩০ নভেম্বরের পর বন্ধ হয়ে যাবে।
ডিসেম্বর থেকে মতিঝিল অফিসে নগদ টাকা, সঞ্চয়পত্র ও প্রাইজবন্ডের কেনাবেচা আর হবে না—এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি ট্রেজারি চালান জমা, ভাংতি টাকা বিতরণ এবং ছেঁড়া-ফাটা নোট বদলের সেবাও বন্ধ হয়ে যাবে। তবে ১৬টি কাউন্টারে কিছু সেবা চালু থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে ধাতব মুদ্রা বিনিময়, স্মারক মুদ্রা বিক্রি, অপ্রচলিত নোটের বিরোধ নিষ্পত্তি ও ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম। ভবিষ্যতে এসব সেবাও কীভাবে ধাপে ধাপে বন্ধ করা হবে—তা নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বাইরে সরকারি–বেসরকারি সব বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদপ্তর ও পোস্ট অফিস থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়। প্রাইজবন্ডও পাওয়া যায় সব ব্যাংক শাখায়। তবু আস্থার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ে গ্রাহকের ভিড় থাকে সবচেয়ে বেশি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী গ্রাহকদের সঞ্চয়পত্রের মোট পরিমাণ ৩ লাখ ৪০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা, যার ৩০ শতাংশের বেশি রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার জালিয়াতির একটি ঘটনা আলোচনায় আসে। মতিঝিল অফিস থেকে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আত্মসাৎ এবং আরও দুই ব্যক্তির ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা ধরা পড়ে। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জালিয়াতির ঘটনা সেবা–বন্ধের মূল কারণ নয়। কেপিআই নিরাপত্তা নীতিমালার আওতায় সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ ও ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতেই মূলত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।