মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ অপরাহ্ন

‎শহীদ আবুল কাশেমের ৫৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালিত

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি।। ‎মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর সন্তান, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক শহীদ আবুল কাশেম মিয়ার ৫৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়েছে।

রোববার (৯ নভেম্বর) শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয় মাঠে যথাযোগ্য মর্যাদা ও গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালিত হয়।

‎শহীদ আবুল কাশেম সাহেব ১৯৭১ সালের ৯ নভেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক বড়বাড়ী ইউনিয়নের আইর খামার এলাকায় নির্মমভাবে নিহত হন। তিনি লালমনিরহাটসহ আশেপাশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের প্রিয় বন্ধু ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শদাতা ছিলেন। জীবনভর তিনি সবসময় দুঃখ-সুখে মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। এলাকার শিক্ষা বিস্তারে তার অবদান অনস্বীকার্য। শহীদ আবুল কাশেম এই অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষাগত কর্মকাণ্ডে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।

‎পরবর্তীতে তিনি বড়বাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ‎চেয়ারম্যান ও পাঙ্গারানী লক্ষ্মীপ্রিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার প্রসারে নেতৃত্ব প্রদান করেন। এছাড়াও, তিনি শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর পিতাও ছিলেন।

‎দিবসটি উপলক্ষে শহীদ আবুল কাশেম মহাবিদ্যালয়সহ স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। কর্মসূচির মধ্যে ছিল সকাল ১১টায় স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা, দুপুর ১২টায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং দুপুর ১টায় শোক র‌্যালি শেষে শহীদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ।

‎অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও জেলার আদিতমারী-কালীগঞ্জ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রোকন উদ্দিন বাবুল, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, সহ-যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবিএম ফারুক সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

বক্তারা শহীদ আবুল কাশেমের অবদান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সাহসিকতা, দেশপ্রেম ও ত্যাগের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে লড়াই করেছেন।

‎তাঁরা আরও বলেন, শহীদ আবুল কাশেম শুধু একজন মুক্তিযোদ্ধা নন, তিনি একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবকও ছিলেন। শিক্ষা বিস্তারে তাঁর অবদান অনন্য। সমাজে আলোর দিশা দেখাতে তিনি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন এবং মানুষের কল্যাণে আজীবন কাজ করেছেন।

‎বক্তারা শহীদের আদর্শ ও দেশপ্রেম থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁদের মতে, জাতির এই গর্বিত সন্তানকে স্মরণ করা মানে দেশ, সমাজ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্নবীকরণ করা।

‎অনুষ্ঠানে শহীদ আবুল কাশেম উচ্চ বিদ্যালয়, হাবিবা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আমবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়বাড়ী কিন্ডারগার্টেন ও বড়বাড়ী ক্যামব্রিয়ান কিন্ডারগার্টেনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com