বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:১২ পূর্বাহ্ন

লোহাগড়ায় অনিয়ম-দূর্নীতি ও নারী কেলেংকারী ধামাচাপা দিতে ২ সাংবাদিকের নামে মামলা

নড়াইল প্রতিনিধি::

নড়াইলের লোহাগড়ায় উপজেলা পল্লী উন্নয়ন (বিআরডিবি) কর্মকর্তার অনিয়ম-দূর্নীতি ও নারী কেলেংকারী ধামাচাপা দিতে দুই সাংবাদিকের নামে মারপিট ও চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হলেন আমাদা গ্রামের মৃত হোসেন সরদারের ছেলে ও দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার লোহাগড়া প্রতিনিধি মোঃ রইচ উদ্দিন টিপু এবং লক্ষীপাশা গ্রামের মৃত আঃ সামাদ ঠাকুরের ছেলে এটিএন বাংলার নড়াইল জেলা প্রতিনিধি টি, এম জহিরুল ইসলাম (জহির ঠাকুর)।

মামলার বাদী ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা জ্যোতি প্রকাশ মল্লিকের অফিসে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার লোহাগড়া প্রতিনিধি মোঃ রইচ উদ্দিন টিপু (৫০) অনাধিকার প্রবেশ করে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ওই কর্মকর্তার নিকট ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকের দাবীকৃত চাঁদার বিষয়ে কোন কথা বলেন নাই। প্রায় ১৫ মিনিট অবস্থান করে সাংবাদিক টিপু অফিস থেকে বের হয়ে যান।

অফিস শেষে ওই কর্মকর্তা উপজেলা চত্বরে বিআরডিবি’র আওতাধীন জোড়া বাড়ি কোয়ার্টারের নিজ বাসায় চলে যান। এরপর বিকাল ৪টার দিকে সাংবাদিক মোঃ রইচ উদ্দিন টিপু ও জহির ঠাকুর ওই কোয়ার্টারে অনাধিকার প্রবেশ করেন এবং কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই কর্মকর্তাকে বেধড়ক মারপিট করেন বলে অভিযোগ। পরে উপস্থিত লোকজন আহত কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়ীতে করে নিয়ে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা বাদী হয়ে ওই দুজন সাংবাদিকের নামে লোহাগড়া থানায় বুধবার একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২০।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সাংবাদিক রইচ উদ্দিন টিপু ও জহির ঠাকুর তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিআরডিবির কর্মকর্তা নিজের অনিয়ম-দূর্নীতি ও নারী কেলেংকারী ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা জ্যোতি প্রকাশ মল্লিক অনিয়ম-দূর্নীতি ও নারী কেলেংকারীর অভিযোগ অ-স্বীকার করে বলেন, তাদের কাছে প্রমাণ থাকলে দেখাক। অযথা হয়রানি করছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজ অফিসে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকদের নিয়ে বিষয়টির সূরাহা করতে বসেন। বিভিন্ন কথাবার্তার এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাংবাদিকসহ নেতৃবৃন্দদের জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেব বুধবার বিষয়টি’র সমাধান করতে চেয়েছেন। একথা শুনে সাংবাদিকরা চলে আসেন। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে থানায় অন্য অফিসারদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে এজাহার দেন। সাংবাদিকদের নামে মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আশিকুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুকুল কুমার মৈত্র জানান, উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেই এজাহার দেয়া হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com