বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

রাবিতে ছাত্রলীগ নেতার হামলায় নাট্যকর্মী আহত

রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় বহিস্কার হওয়া ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে এবার এক নাট্যকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

৬ মার্চ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ উদ্দিন কলা ভবনের পাশে মারধরের শিকার হন অনুশীলন নাট্যদল কর্মী মইনুল ইসলাম। গুরুতর আহতবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে বিশ^বিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুর রহমান কানন বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ।

জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মমতাজ উদ্দিন কলা ভবনের সামনে বন্ধু ও বান্ধবীসহ আড্ডায় ছিলেন মইনুল নামের ওই শিক্ষার্থী। এদিকে মইনুলের বান্ধবী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ও কলা অনুষদ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝলক সরকারের সহপাঠি। বান্ধবীকে অন্য ছেলের সাথে আড্ডায় দেখে কারণ জানতে চায় ঝলক। এক পর্যায়ে মইনুলের সাথে বসে থাকা বান্ধবী ঝলককে উদ্দেশ্য করে উত্যক্ত মূলক কিছু কথা বলতে থাকে। দুই পক্ষ নিজেদের অবস্থা জানান দিতে বড় ভাইদের ঘটনাস্থলে ডেকে পাঠায়। এঘটনায় রাগন্বিত হয়ে মঈনুলকে মারধর শুরু করে ঝলক সরকারের সঙ্গে থাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কানন। পরে মইনুলের বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। আহত মইনুল রামেকের ৮নং ওর্য়াডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে গত বছরের ১০ জুলাই বিশ^বিদ্যালয়ের ডেইলি স্টারের সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে স্থায়ীভাবে বহিস্কার হয় ওই ছাত্রলীগ নেতা। আবার সাংবাদিক হত্যাচেষ্টা মামলার আসামীও তিনি। তবে ওই ঘটনায় কাননকে বহিষ্কার করা হলেও বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সুপারিশে কয়েকমাস পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। এর পর আবারও মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

ঘটনার ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুর রহমান কানন বলেন, ‘মারধরের ঘটনা ঘটেনি। সেখানে কথা কাটাকাটি দেখে আমি মিমাংসা করে দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। এসময় আমার ছোট ভাইদের চড়-থাপ্পর দিয়ে সমাধান করে দিয়েছি’।

ছাত্রলীগ নেতা ঝলক সরকার বলেন, বান্ধবীকে নিয়ে অন্য ছেলে বসে থাকায় কারণ জানতে চেয়েছিলাম। বান্ধবীর সাথে কথা বলে ফিরছিলাম এমন সময়ে মইনুল সহ বান্ধবী ভয় পেয়েছে সহ নানা রকম উত্যক্ত মূলক কথাবার্তা বলতে থাকে। এসময় একটু ঝামেলা হয়েছিল, বড় ভাইয়েরা থেকে মিমাংসা করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দেখছি। সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হলে নেয়া হবে।

অনুশীলন নাট্যদলের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিক বলেন, আমার সংগঠনের কর্মীর যদি দোষ থেকে থাকে তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ছাত্রলীগের উচিত হবে যে মারধর করেছে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

এদিকে মারধরের ঘটনায় বিচারের দাবিতে বুধবার বেলা ১২ টায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী। বিক্ষোভ মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে টুকিটাকি চত্বরে সমাবেশ করেন তারা।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে বাস ভাংচুরের ছবি তোলার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও দ্য ডেইলি স্টারের সাংবাদিক আরাফাত রহমানকে মারধর করে ছাত্রলীগ নেতা মাহমুদুর রহমান কানন। ওই ঘটনায় কাননকে বহিষ্কার করা হলেও কয়েকমাস পর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com