বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৬ অপরাহ্ন
রাবি প্রতিনিধি:
রাত পেরুলেই পহেলা বৈশাখ। সার্বজনীন এ উৎসবে নতুন রঙে নিজেকে সাজিয়ে নববর্ষকে বরণ করতে শেষ মূহুর্তের প্রস্তুতি চলছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে। বর্ষবরণ উপলক্ষে বাংলা, নাট্যকলা ও সঙ্গীত, আইন, মার্কেটিং, ফোকলোরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবগুলো বিভাগের রয়েছে পৃথক পৃথক নানা আয়োজন। চলছে ব্যানার, ফেস্টুন তৈরির কাজ। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। তবে প্রতিবছরই মূল আকর্ষণ থাকে বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদকে ঘিরে। তাই বাঙালি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে রাত-দিন কাজ করছেন এ অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিনব্যাপি নান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে অনুষদটি। এদিন শনিবার সকাল ৯টায় অনুষদের সামনে থেকে রাজশাহী অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হয়েছে প্রধান মোটিফ ‘বিদ্রোহের প্রতিক’ (ষাঁড়) এবং ‘শান্তির প্রতিক’ (পায়রা)।
আর অশুভ শক্তি দূর কারার প্রত্যয়ে থাকছে বড় বড় পাশা, মুকুটসহ ২০০টি ব্যতিক্রম ধর্মী মুখোশ। এরপর বিকেলে সমবেত সঙ্গীত, লোকসঙ্গীত, বাউলসঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, হরবোলা ও অভিনয় ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী মনুমোহন বাপ্পা বলেন, ‘বর্ষবরণের কাজ ভালভাবে করতে নিজ উদ্যোগে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাংলার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলতে হাতপাখা, মাছ, প্রজাপতিসহ নানা রঙের মুখোশ তৈরির কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও পহেলা বৈশাখ উদযাপন কমিটির সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী বলেন, ‘ষাঁড় হচ্ছে বিদ্রোহের প্রতিক। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ কিন্তু এদেশের বাঙ্গালীয়ানা কৃষি সংস্কৃতির লাঙ্গল, গরুর গাড়ী, ঢেঁকি, কুলা, তালের হাত পাখাসহ প্রায় অধিকাংশ কৃষিজ যন্ত্রপাতিগুলো ব্যবহার থেকে বেরিয়ে এসেছে। তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই উদ্যোগ।’
আর পায়রা বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পায়রা হলো শান্তির প্রতিক। বর্তমান সময়ে দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীলসহ নানা কারণে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাই এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে শান্তির প্রতিক হিসেবে পায়রা ব্যবহার করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠানের শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে। আরেকটু কাজ বাকি আছে। শেষ হলে সুন্দর একটি অনুষ্ঠান উপহার দিতে পারব।’
বর্ষবরণে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ‘বর্ষবরণ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে অটো রিক্সা ভিতরে চলবে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বিকেল ৫টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’