বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৬ অপরাহ্ন

পুঁজিবাজারে আজীবন নিষিদ্ধ হলেন শিবলী-রিয়াজ

ছবি-সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজারের সব কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে এলআর গ্লোবাল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামকেও।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত ৯৭৮তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।

সভা শেষে বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার লিমিটেডে বিনিয়োগ ও কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেডের মূলধন ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করার প্রক্রিয়ায় অনৈতিক যোগসাজশের প্রমাণ পাওয়ায় বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও রিয়াজ ইসলামকে পুঁজিবাজারের সব কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে পুঁজিবাজারের ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কোয়েস্ট বিডিসি (সাবেক পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালার) লিমিটেডের কার্যক্রম পরিচালনায় অনিয়ম, দুর্নীতি ও আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পায় বিএসইসির গঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি। পরে কমিটি কোম্পানির পরিচালক এবং এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলাম এবং সাবেক বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করে। সেই সুপারিশের আলোকে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম ও রিয়াজ ইসলামকে পুঁজিবাজারের সব কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হলো।

কমিটির অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে, কোয়েস্ট বিডিসির পরিচালনা পর্ষদ উচ্চ দামে শেয়ার ক্রয় করেছে, ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ড থেকে কর্মকর্তাদের পরিচালক পদে বসিয়েছে, সম্পদের ভ্যালুয়েশন তৈরি ও তহবিলের অবৈধ ব্যবহার করেছে, অনুমোদনবিহীন ব্যবসা পরিচালনা করেছে, সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করেছে। একইসঙ্গে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

তদন্ত কমিটি উল্লেখ করেছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান এবং রিয়াজ ইসলামের যোগসাজশে এলআর গ্লোবালের ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের তহবিল ব্যবহার করে পদ্মা প্রিন্টার্সের ৫১ শতাংশ শেয়ার কেনা হয়েছিল। উদ্যোক্তা-পরিচালকের শেয়ার উচ্চ দামে ক্রয় করা হয়েছিল এবং ছয় কর্মকর্তাকে পরিচালক পদে বসানো হয়েছিল। অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত মূল স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার বিক্রির জন্য প্ররোচিত করেছেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এলআর গ্লোবালের ব্যবস্থাপনায় থাকা মিউচুয়াল ফান্ডগুলোকে তালিকাবহির্ভূত কোম্পানি ও সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের মাধ্যমে অপব্যবহার করা হয়েছে, যা মূলধনের ক্ষতি বাড়িয়েছে। এ কারণে রিয়াজ ও শিবলীকে আজীবন নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুদকের কাছে অভিযোগ পাঠানোর সুপারিশও করা হয়েছে, যাতে প্রমাণিত অনিয়ম এবং মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত বিস্তারিত তদন্ত করা যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com