মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৭ অপরাহ্ন
স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ১৭ নভেম্বর সোমবার ১১ দলের খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তাদের উপস্থিতি, গ্যালারি ভরা ছাত্র-ছাত্রীর করতালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ণিল আয়োজনে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন কাবাডি বিশ্বকাপের।
জমজমাট উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষেই মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ১৪-১২ পয়েন্টে। এর আগে বিশ্বকাপ কাবাডির উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ আহমেদ সজীব ভূঁইয়া। যদিও প্রথমার্ধে ভালোই লড়াই করেছে উগান্ডা। শুরুতে বাংলাদেশের মেয়েদের একটু রক্ষণাত্মক মনে হয়েছে। তবে পুরো ম্যাচেই স্মৃতি আক্তার ছিলেন ব্যতিক্রম।
মঙ্গলবার ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জার্মানির মুখোমুখি হবে মেয়েরা। আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন উগান্ডা প্রথমার্ধে লড়াই জমিয়ে তুলেছিল। তবে ঠিকই ১৪-১২ পয়েন্টে এগিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
মূলত ডিফেন্ডার হলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রেইডে গিয়ে পয়েন্ট তুলে নিয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রাখেন তিনি। উগান্ডা প্রথমবারের মতো এসেছে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে। শারীরিক দিক দিয়ে তারা এগিয়েছিল স্বাগতিকদের চেয়ে। অভিজ্ঞতা ও ট্যাকটিকসে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। তারপরও প্রথমার্ধে উগান্ডাকে খুব বেশি পিছিয়ে রাখা যায়নি। প্রথমার্ধে বাংলাদেশ মাত্র দুই পয়েন্টে (১৪-১২ পয়েন্টে) এগিয়ে ছিল। বিরতির পরও উগান্ডা বেশ কিছুক্ষণ ছিল খেলায়। একটা সময় তো বাংলাদেশের অর্ধ্বে ছিলেন কেবল স্মৃতি আক্তার। পয়েন্টেও ছিল সমতা। পরে আফ্রিকান প্রতিনিধি উগান্ডা এগিয়েও গিয়েছিল।
তবে ডু অর ডাই রেইডে দুইজনকে ঘায়েল করে স্মৃতি দারুণভাবে দলকে ম্যাচে ফেরান। এরপর আর থামানো যায়নি স্বাগতিকদের। দ্বিতীয়ার্ধে দুই বার উগান্ডাকে অলআউট করে ব্যবধান অনেক বাড়িয়ে নেয় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিতে নেয় ৪২-২২ পয়েন্টে। অর্থাৎ দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ যেখানে ২৮ পয়েন্ট তুলেছে, সেখানে উগান্ডা তুলতে পারে মাত্র ১০ পয়েন্ট। আগামীকাল বিকাল পাঁচটায় ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে জার্মানির। বুধবার উগান্ডা তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, আন্তর্জাতিক কাবাডি ফেডারেশের (আইকেএফ) সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বাহারুল আলম বিপিএম, সাধারণ সম্পাদক এসএম নেওয়াজ সোহাগ ও বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে উদ্বোধন হয় দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের। স্টেডিয়ামের বাতি নিভিয়ে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আলো-আঁধারী আবহে নৃত্যশিল্পীরা আদিবাসী, আধুনিক গানের সঙ্গে ফুটিয়ে তুললেন বাংলাদেশের আবহমানকালের ঐতিহ্য। বাংলাদেশ-উগান্ডা ম্যাচ দিয়ে মাঠের লড়াই শুরুর আগ পর্যন্ত ঢাক-ঢোলের বাদ্যে, বিভু, সমতল, পাহাড়ি নৃত্য উপভোগ করলেন গ্যালারিতে আসা সমর্থকরা।
“প্রথম ম্যাচ যেহেতু জিতেছি, পরের গুলোও ইনশাআল্লাহ হবে এরকম। এটা আমার প্রথম বিশ্বকাপ। আমার অনেক আনন্দ লাগছে যে, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি। আমরা সবাই এক সঙ্গে মিলে বাংলাদেশকে কিছু পদক জয় দিব ইনশাল্লাহ।”
২০১২ সালের ১৩ বছর পর বিশ্বকাপের আরেকটি আয়োজন নিয়ে উচ্ছ্বসিত সবাই। বৈশ্বিক নারী কাবাডি বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো আয়োজন করছে বাংলাদেশ।