বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
ফরিদ আহমেদ, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:: কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ১১ নং আদাবাড়ীয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে দুঃস্থ, প্রতিবন্ধী ও বিধবাদের ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীরা বলছে, তাদের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে ভাতা অন্য আত্মীয়দের নামে উত্তোলন করা হয়েছে।
স্থানীয় শারীরিক প্রতিবন্ধী সুলতান হোসেন জানান, দেড় বছর আগে তার নিবন্ধিত নম্বরে একবার ভাতা পেয়েছিলেন, এরপর আর কোনও টাকা পাননি। কয়েকবার আমজাদ মেম্বরের কাছে গেলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও টাকা দেননি। অক্টোবর মাসে টাকা না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গেলে সমাজসেবা অফিসর তাকে জানান যে ভাতার টাকা অন্য নম্বরে গিয়েছে, ওই নম্বর তিনি দেখতে পাননি।
বিএনপির ১১ নং আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম জানান, অনেকেই অভিযোগ নিয়ে তার কাছে এসেছেন। সমাজসেবা অফিসারের দেওয়া নম্বরটি ডায়াল করলে ফোন রিসিভ করেন বজলুর রহমান যিনি অভিযোগে নাম থাকা আমজাদের শশুর। খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগীরা শহিদুলের পার্টি অফিসে জমায়েত হয়েছেন। স্থানীয়রা মনে করছেন কমপক্ষে ৪০-৫০ জন ভাতাভোগীর টাকা অনুপস্থিত থাকতে পারে।
এক বিধবা সুরতন নেছা বলেছিলেন, দেড় বছর আগে একবার বিধবা ভাতা পেয়েছিলেন তারপর থেকে আর ভাতার টাকা পাননি। অভিযোগ রয়েছে- বিধবা ভাতা ও সরকারি বাড়ি দেয়ার নামে মেম্বর তাঁর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছেন বাড়ি ও পুনরায় ভাতা পাননি। মাসিকুল ইসলাম জানান, তার শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে সুফিয়ানের ভাতা চালু হওয়ার ছয় মাস পর পাওয়া শুরু হলেও পরের ৯ মাসের টাকা মেলেনি অভিযোগ করলে আমজাদ মেম্বর রাতের বেলায় বাড়ি এসে চাপ দিয়ে পরে ৭ হাজার ৭শত টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।

আরও অভিযোগ রয়েছে- প্রমুতি ভাতার জন্য আমজাদ মেম্বর ছাত্তারের স্ত্রীর নামে কার্ড করার নাম করে দুই বছর আগে ৬ হাজার টাকা নিয়েছিলেন, ছাত্তার এখনও টাকা ফেরত পাননি ও কার্ডও করা হয়নি। ভুক্তভোগীদের দাবি, শুধুই ভাতা নয়, বিভিন্ন সরকারি সুবিধার নামে দরিদ্র ও অসহায়দের কাছ থেকে বড় অংকের অর্থ নেয়া হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গেলে ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য আমজাদ হোসেন ঘটনা স্বীকার করে বলেন, এধরনের প্রায় ১০ জনের মতো ভাতাভোগীর টাকা সংক্রান্ত অনিয়ম হয়েছে; তা আমার ভুল।
১১ নং আদাবাড়ীয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল বাকি বলেন, গরীবদের ভাতার টাকা কাউকে খাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না, প্রমাণ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো: জহিরুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিকী অভিযোগ নিশ্চিত করে বলেন, বিভিন্ন ভাতাভোগীর মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে আত্মীয়দের নম্বর দেয়া হয়ে থাকতে পারে এবং ভাতার নামে অর্থ গ্রহন করারও অভিযোগ আছে, তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।