শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৪ পূর্বাহ্ন
গাজীপুর প্রতিনিধি ॥
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী (অব.) মো. হাসান আলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করা হয়েছে। অভিযোগকারী, গাজীপুরের নাগরিক মো. শাহজাহান খান, দুদকের চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদনে এসব অবৈধ সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, গাজীপুরের দক্ষিণ আউচপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা হাসান আলী বিদ্যুৎ বিভাগে যখন চাকরি শুরু করেন, তখন তাঁর বেতন ছিল মাত্র ৯০০ টাকা। অথচ অবসরের পর তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা প্রায় ৪০ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক হয়েছেন, যা তাঁর বৈধ আয়ের সঙ্গে কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
যেভাবে হলো সম্পদের পাহাড়
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘুষ, কমিশন, টেন্ডার বাণিজ্য এবং অবৈধ প্রভাব খাটানোর মাধ্যমেই হাসান আলী এই বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। তাঁর এবং পরিবারের সদস্যদের কেনা বেশিরভাগ সম্পত্তিই গাজীপুর ও টঙ্গী এলাকায় অবস্থিত।
তাঁর ও পরিবারের নামে থাকা সম্পত্তির একটি তালিকা অভিযোগে তুলে ধরা হয়েছে:
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন (৩৫নং ওয়ার্ড): প্রায় ১৩ কাঠা জমির ওপর দুইতলা ভবনসহ টিনশেড বাড়ি ও খালি জমি।
টঙ্গীর আউচপাড়া (চেরাগ আলী মাদবর রোড): একটি ৭তলা বিশাল ভবন (অনুমোদন ছিল ৪ তলার), পাশেই ‘হাসনে হেনা ভিলা’ নামের একটি ৫তলা বাড়ি এবং আরও কয়েক কাঠা খালি জমি।
টঙ্গী: টঙ্গী পাইলট স্কুল মার্কেটে একটি দোকান।
শ্রীপুর: ৪ কাঠার ওপর ‘আদিল সুপার মার্কেট’ নামের একটি মার্কেটসহ ১ বিঘা জমি।
গাজীপুর ইউনিয়ন (গাজীপুর গ্রাম): নিজ নামে ৪ বিঘা, ছেলের নামে ৬ কাঠা, মেয়েদের নামে ১০ কাঠা জমি।
গাজীপুর মধ্যপাড়া: ৬ কাঠা জমিসহ একটি টিনশেড বাড়ি।
মাওনা চৌরাস্তা (কেওয়া মৌজা): ‘আদেল সুপার মার্কেট’ নামে আরেকটি মার্কেট এবং একই এলাকায় ছেলের নামে আরও ১.৫ বিঘা জমি।
অভিযোগকারী দাবি করেন, এসব সম্পদের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। শাহজাহান খান দুদক আইন, ২০০৪ অনুযায়ী দ্রুত এই অভিযোগের তদন্ত, সম্পদ জব্দ এবং সুষ্ঠু অনুসন্ধান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন।
তবে এই বিষয়ে জানতে দুদকের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।