রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:২০ অপরাহ্ন

কালীগঞ্জে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হয়রানি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ, ‘রেড জোন’ গোড়লে মাদকবিরোধী অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ

‎‎জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, ‎​লালমনিরহাট প্রতিনিধি।। ‎লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ‘রেড জোন’ খ্যাত গোড়ল ইউনিয়নে মাদকবিরোধী অভিযানের মাঝে গোড়ল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মোস্তাকিম ইসলাম ও কনস্টেবল ফারুকের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে হয়রানি, নির্যাতন ও জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

‎এঘটনায় ​স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম ইনচার্জ মোস্তাকিম ও কনস্টেবল ফারুকের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে জানান, গত ৯ অক্টোবর রাতে বাড়ি ফেরার পথে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ধরে মারধর করে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। সে টাকা দিতে অস্বীকার করলে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়।

​স্থানীয় মুদি দোকান ব্যবসায়ী মহরম আলী ও রাইসমিল ব্যবসায়ী আব্দুল জলিলও সাইদুলকে পুলিশি মারধরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

‎​এছাড়াও স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, ইনচার্জ মোস্তাকিম এক বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্বে থেকে মাদক কারবারিদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন এবং তাদের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন। এমনকি মাদক ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা মানুষদেরও নতুন করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, কিছু কুচক্রীর প্ররোচনায় নিরীহ মানুষকেও হয়রানি ও ঘরবাড়ি তল্লাশি করে পুলিশ।

​এর আগেও একই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মোফা নামের এক ব্যক্তিকে ধাওয়া দিয়ে ধরে নির্যাতন ও ৫০ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। নির্যাতিত মোফা জানান, তাকে মারধর করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভিডিও বক্তব্য নেওয়া হয়।

​নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাদ্রাসা শিক্ষক বলেন, সম্প্রতি বগুড়াপাড়া ব্রীজের পশ্চিমে তৌহিদুল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কিছু না পেয়েও পরে নদীপাড় থেকে গাঁজা উদ্ধার করে এবং তা তৌহিদুলের বাড়ি থেকে পাওয়া গেছে বলে দাবি করে মামলা দেয় পুলিশ। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গোড়ল পুলিশের কিছু সদস্যের সঙ্গে মাদক কারবারিদের সুসম্পর্ক রয়েছে।

‎​এসব অভিযোগের বিষয়ে গোড়ল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মোস্তাকিম ইসলাম সব অস্বীকার করে উল্টো মাদক ব্যবসায়ীরা তাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে বলে দাবি করেন।

​লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) তরিকুল ইসলাম জানান, গোড়ল ইউনিয়নের মাদক পরিস্থিতি পুলিশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি ইনচার্জের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন এবং নিরীহ কাউকে হয়রানির সুযোগ নেই বলেও জানান। একই সঙ্গে মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক সচেতনতা কার্যক্রমও চলছে বলেও জানান তিনি।

​এই পরিস্থিতিতে ‘রেড জোন’ গোড়লে মাদক নির্মূলে পুলিশের ভূমিকা এখন প্রশ্নের মুখে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com