বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের উলিপুরে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ওই রোগীর জরায়ু কেটে ফেলার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর প্রতিবাদে উলিপুর পৌরশহরের মসজিদুল হুদা মোড়ে সচেতন ছাত্র জনতার ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন, নিহত নবজাতকের নানী রুবিনা বেগম, সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষে মতলেবুর রহমান মঞ্জু, ছাত্র নেতা নাজমুল হাসান, মনির হোসাইন, সারফারাজ সৌরভ, আসাদুজ্জামান আসাদ, রোমিও হাসান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, উলিপুর ডক্টরস কমিউনিটি ক্লিনিক সহ সকল ক্লিনিকের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে তদন্ত করতে হবে। উক্ত ক্লিনিকের সকল ডাক্তার-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মালিকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ডক্টরস ক্লিনিক সহ যে সকল ক্লিনিকে রক্ত বাণিজ্য হয় সে সকল ক্লিনিক বন্ধ করতে হবে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর উলিপুর ডক্টরস কমিউনিটি ক্লিনিকে পৌরসভার নাড়িকেলবাড়ি এলাকার বেলাল বকসীর স্ত্রী মিথী খাতুনকে সন্তান প্রসবের জন্য ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই নবজাতক জন্মগ্রহণ করেন। এ সময় নবজাতকের মায়ের জরায়ু কেটে ফেলা হয় এবং সেখানে ১২টি সেলাই দেয়া হয়। এরপর নবজাতকের শ্বাসকষ্ট হলে পরদিন ২১ অক্টোবর চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নবজাতকের মৃত্যু হয়। পরে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় নিহত নবজাতকের পিতা বেলাল বকসী বাদী হয়ে ঘটনার প্রতিকার চেয়ে উলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
নিহত নবজাতকের পিতা বেলাল বকসী বলেন, আমার সন্তানকে মেরে ফেলা হয়েছে। এর জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। আর কারও সন্তান যেন এমন ঘটনার শিকার না হয়। থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে উলিপুর ডক্টরস কমিউনিটি ক্লিনিকের পরিচালক ডা. লোকমান হাকিম জানান, ওই রোগীর প্রথম সন্তান ছিল এটি। এ কারনে পরিবারের পক্ষ থেকে সিজারিয়ান না করার অনুরোধ ছিল। ফলে জরায়ু অপারেশন করে নবজাতককে বের করা হয়। এ সময় নবজাতকের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিয়ে নবজাতকের মায়ের চিকিৎসাসহ অন্যান্য বিষয়ে ভিকটিমের পরিবারের সাথে আলোচনা করে মিমাংসা করা হয়। এছাড়া ভুল চিকিৎসার বিষয়টি সত্য নয়।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তাৎক্ষনিক পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পরে শুনেছি উভয় পক্ষ মিমাংসা করেছে। যেহেতু ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে মানববন্ধন হয়েছে। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।