সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:১৫ অপরাহ্ন
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের উলিপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় শাহ আলম (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় উত্তেজিত জনতা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে বিক্ষোভ করেছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে এই ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে চিকিৎসকদের দাবি, যথাযথ নিয়ম মেনেই শাহ আলম নামে ওই ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার জোনাইডাঙ্গা এলাকার দস্ত শেখের ছেলে শাহ আলম রোববার দুপুরে অসুস্থ্য হলে স্ত্রী আর্জিনা বেগম (৪০) তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এরপর জরুরী বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে বেডে হস্তান্তর করেন। এ সময় শাহ আলমকে দ্বিতল ভবনের পুরুষ ওয়ার্ডে নেয়ার সময় ভবনের সিড়িতে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
নিহত শাহ আলমের স্ত্রী আর্জিনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, পেটের পিড়া ও উচ্চরক্তচাপের কারনে আমার স্বামী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বাড়ি থেকে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা না দিয়ে বেডে নিয়ে যেতে বলেন। চিকিৎসকদের অবহেলার কারনে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তাকে যদি প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হতো তাহলে হয়তো এই ঘটনা ঘটতো না। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আনারুল ইসলাম জানান, শাহ আলম নামের ওই ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেডে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু তাকে বেডে নিতে দীর্ঘসময় ক্ষেপন করা হয়। এতে রোগীর অবস্থা গুরুত্বর হয় এবং তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এখানে চিকিৎসকদের কোন অবহেলা ছিল না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি সঠিক নয়। রোগীকে সংকটময় সময় এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল। ওই রোগীকে নিয়ম মেনেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বেডে হস্তান্তর করা হয়েছিল। সাথে থাকা ব্যক্তিরা রোগীকে বেডে নিতে সময় ক্ষেপন করায় এই ঘটনা ঘটেছে। রোগীর পরিবারের লোকজন যদি কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ করেন, তাহলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে এমন খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি শান্ত করে মরদেহ নিহতের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।