রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:২০ অপরাহ্ন

 ১১ লিফটের ৯টিই অচল, ভোগান্তি চরমে

অনলাইন ডেস্ক, একুশের কন্ঠ : বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রবেশের পর থেকে নানা ভোগান্তিতে পড়ে রোগীসহ স্বজদের। ১১টি লিফটের ৯টিই অচল। আবার একটি মাঝেমধ্যে আটকে যায়। গণপূর্ত বিভাগের দোহাই দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুইটি লিফট দিয়ে রোগীসহ দর্শনার্থীরা চলাচল ও জনভোগান্তির কথা স্বীকার করেন, কিন্তু গণপূর্ত বিভাগ বলছে ভিন্ন কথা।

সমস্যা যার সারা অঙ্গে। তার উপরে ভরসা করে প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ। পদ্মার এপারের মানুষের চিকিৎসা সেবায় ভরসাস্থল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বয়সের ভারে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে হাসপাতালটিতে। চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে রোগীদের অভিযোগ থাকলেও হাসপাতালটিতে ঢোকার পর থেকে শুরু হয় নানা ভোগান্তির।

গত চার দিন আগে উজিরপুর থেকে সন্তানের চিকিৎসা করতে আসা মুক্তা জানান, সন্তানের ওষুধ কিনতে লিফটে উঠে ২০ মিনিট আটকা ছিলেন। দম বন্ধ হয়ে নিজেই মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন।
তার মতোই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা পড়েছেন লিফট নিয়ে নানা বিড়ম্বনায়। ইমার্জেন্সি গেট থেকে রোগী বহন করা ট্রলি নিয়ে লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বহুক্ষণ।

রোগীর স্বজন জুবায়ের বলেন, লিফটগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। হাসপাতালের পশ্চিম মাথায় একটি লিফট ভালো আছে। জরুরী ভিত্তিতে রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেছি লিফট ঠিক হয়েছে তার পর উপরে আসছি। এরকম একটি হাসপাতালের অবস্থা এ তো রোগীদের চাইতেও অসুস্থ। আমাদের দাবি অতি দ্রুত লিফট গুলো ঠিক হোক।

ট্রলিতে রোগী বহনকারী বয় মো. রুবেল হাওলাদার বলেন, সব লিফট নষ্ট। দুই একটা চলে তাও মাঝে মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। রোগী নিয়ে লিফটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পাবলিক রোগী সব এক লিফটে উঠে। কোন কোন সময় পাবলিক উঠে যায় রোগী নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। হাসপাতালের বাকি লিফটগুলো না ঠিক করলে কয়দিন পর যে দুইটা চলে তাও বন্ধ হয়ে যাবে।

ইমারজেন্সি গেটের সামনের অংশে দুটি লিফট থাকলেও সচল রয়েছে একটি এবং প্রধান ফটকের মাঝের অংশে ছয়টি লিফ থাকলেও রোগী বহনকারী লিফট রয়েছে একটি। তাও মাঝে মধ্যে আটকে পড়ে। এখানে ১৯৬৮ সালের দুটি লিফটের একটি সচল রয়েছে। যাও নড়বড়ে অবস্থা। এতে ডাক্তার, স্টাফরা চলাচল করে। বাকি লিফটগুলোর অবস্থা বেহাল।

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ডা. এ এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবন এবং লিফটগুলো অনেক পুরনো হাওয়ায় বেশি ভাগই অচল। তবে লিফটগুলোর দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের হাওয়ায় পত্র প্রেরণ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। তিনি জন ভোগান্তির কথা স্বীকার করলেও নিরুপায়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে লিফটগুলো অচল থাকার কথা স্বীকার করে, শিগগিরই এ সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের এই নির্বাহী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়সাল আলম।

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উন্নত চিকিৎসার জন্য ৫৬ বছর আগে ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করা হয় ৫শ শয্যার বরিশাল শের-ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতাল। ২০০৬ সালে হাসপাতালটি ১০০০ শয্যায় উন্নতি করা হয়েছে। এরপর থেকে প্রতিদিনই এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকছেন প্রায় তিনগুণ রোগী।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Titans It Solution