বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৩৯ অপরাহ্ন

হাটহাজারীতে পরকীয়ার জের ধরে স্বামীকে হত্যা

এম এ আহমেদ আরমান, উত্তর (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি::

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মধ্যম নাঙ্গলমোড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড হেদায়াত আলীর পাড়ার মরহুম রাজা মিয়ার ছোট ছেলে দুই সন্তানের জনক এম সেলিম উদ্দিন(৪০)কে তাঁর স্ত্রী কুনছুমা সিদ্দিকা প্রিয়া (৩০) গত শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে আহত করে। আহত সেলিমকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করে।

নিহতের বোন পারভিন কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রতিবেদককে জানায়, আমার ভাই গত সাত দিন ধরে টাউনে আমার বাসায় ছিল। বউয়ের অত্যাচারে নির্ঘুম রাত্রীযাপন করত আমার ভাই। দীর্ঘ দুই বছর হলো সে দেশে ফিরেছে। দেশে আসার পর থেকে আমার ভাইয়ের বউয়ের অত্যাচারের সীমা ছিল না। ঘর থেকে বাহির করে দিয়ে আমার ভাইকে কুঁড়ে ঘরে যেখানে লাকড়ী রাখা হতো ওখানে থাকতে দেয়া হয়েছে দেড় বছর ধরে। রাতে বাসায় ঢুকলে কিরিস দিয়ে চোর চোর বলে ধাওয়া করত, রাতে ভাত দিতো না,পানি দিতো না।

কিছু খাওয়ার জন্য চাইলে দা, বটি, কিরিস দিয়ে সারা বাড়ি দৌঁড়াত এ মহিলা। প্রায়ই সময় প্রিয়া রাতের বেলা বাড়ির মূলফটকের দরজায় তালা দেওয়ার কারণে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারতো না আমার ভাই, যার ধরুন খাবার না খেয়ে মসজিদের বারান্দায় রাত যাপন করতো আর গত সপ্তাহে আমার ভাই যে ঘরের তালা ভেঙ্গে সমস্ত কাপড়, চাদর সহ যাবতীয় সবকিছু পুকুরে ছুড়ে ফেলে দেয় প্রিয়া। এ জল্লাদ মহিলাটি বার বার ডিভোর্স চাইত, আর বলত আমি এখান থেকে যাবো না এখানেই রাজত্ব কায়েম করবো কিন্তু আমার বিদেশ ফেরত ভাইয়ের অর্থকড়ি স্বচ্ছল না থাকায়, দুইটি ছেলে-মেয়ের দিকে তাকিয়ে সংসার করত।

তিনি আরো বলেন, এ মহিলা বিভিন্ন ছেলের সাথে ইমুতে/মেসেঞ্জারে স্থানীয় পর-পুরুষের সাথে ফোনে অশলীল কথা বলতো, ভিডিও কলে নানা ধরনের কুকর্মে লিপ্ত ছিল। এসব কিছু আমার ভাইয়ের সামনেই করত, কিন্তু দুইটি অবুঝ সন্তানের দিকে তাকিয়ে আমার ভাই ডিভোর্স দিতে চাই নি। এককথায় অমানবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে আমার ভাই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী জনৈকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রিয়া নামের মহিলাটি সামাজিক মিডিয়া ফেইসবুক মেসেঞ্জারে অনেক ছেলেদের সাথে কথা বলত, প্রেম করত,স্বামীকে না বলে রিজার্ভ সিএনজি করে নানা জায়গায় ঘুরতে চলে যেত। স্বামী সেলিম এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যান, থানা-পুলিশ আইন আদালতে দৌঁড়ানোর পরও কোন সুরহা মেলেনি।

এ বিষয়ে সেলিমের স্ত্রী কুনছুমা সিদ্দিকা প্রিয়ার কাছে জানতে চাইলে, তিনি নির্ধিদায় দোষ স্বীকার করেন প্রতিবেদকের কাছে। নিহত সেলিমের বড় ভাই শাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশের এস আই আকরাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মাসুদ আলম বলেন,আমরা লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছি।এবং বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।

অবশেষে লাশের সব আইনি কার্যক্রম শেষে ১৪ সেপ্টেম্বর (সোমবার) সন্ধ্যা ৭ টার সময় বায়তুন নুর জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে জায়নাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com