বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন

হাইকোর্টের রুল রাইফার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না

ই-কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:: চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় শিশু রাফিদা খান রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে কেন যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার কারণে হাসপাতাল এবং সংশ্নিষ্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিকিৎসায় অবহেলা বা ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হলে বা ক্ষতিগ্রস্থ হলে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কেন নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুল জারি করে এই আদেশ দেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল), বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের সভাপতি, ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সংশ্নিষ্ট তিন চিকিৎসককে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রাইফার বাবা চট্টগ্রামে সমকালের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোহাম্মদ রুবেল খান। তিনি গত ৯ আগস্ট হাইকোর্টে ভুল চিকিৎসায় রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট আবেদন করেন। পরে মঙ্গলবার ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। আদালতে রিট আবেদনেরপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

গত ২৯ জুন সাংবাদিক রুবেল খানের আড়াই বছরের মেয়ে রাইফার মৃত্যু হয়। গলায় ব্যথা নিয়ে ২৮ জুন বিকালে চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে ‘ভুল চিকিৎসায়’ তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। এরপর ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি কমিটি করা হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে। এরমধ্যে সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি ৫ জুলাই তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। সেখানে শিশুটির চিকিৎসায় কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা এবং গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ জন্য সংশ্নিষ্ট তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হয়। তিন চিকিৎসক হলেন- ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত এবং ডা. শুভ্র দেব। তাদের মধ্যে দেবাশীষ ও শুভ্রকে চাকরিচ্যুত করার কথাও জানায় ম্যাক্স কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাইফা যখন তীব্র খিচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন সংশ্নিষ্ট চিকিৎসকদের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয় এবং ওই সময়ে থাকা সংশ্নিষ্ট নার্সদের আন্তরিকতার অভাব না থাকলেও এ রকম জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলা করার মতো দক্ষতা বা জ্ঞান কোনোটাই তাদের ছিল না।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরী শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ সহকারে পরীক্ষা করে দেখেননি। ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব শিশুটির রোগ জটিলতার বিপদকালীন সময়ে আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে শিশুর পিতা-মাতা যে অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যাহা এই তিন চিকিৎসকের বেলায় সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।’ মঙ্গলবার এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com