বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন

সোহেল হত্যা মামলায় সাত ভাইসহ ৮ জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ অনলাইন:: মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার টেংগারচর গ্রামের ডিস সংযোগ দেওয়া সোহেল প্রধানকে হত্যা মামলায় সাত ভাইসহ ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২১ জুন) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিমের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কামাল মোল্লা, জামাল মোল্লা, বিল্লাল মোল্লা, হারুন মোল্লা, মহসিন মোল্লা, আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রথম সাত জন সম্পর্কে ভাই। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও ১ বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আমির হোসেন, জাকির হোসেন ও জাবেদ হোসেন পলাতক রয়েছেন। আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অপর ৬ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে ফারুক, রুবেল, জাকির হোসেন, ইমাম হোসেন, মোশারফ হোসেন ওরফে মোহন, বিল্লাল খান, আনিছুর রহমান, আলী আকবর, নূরুজ্জামান, ওয়ায়েছ কুরুনী, রানা মোল্লা ও আ. গাফ্ফারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, সোহেল প্রধান (২৬) মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন টেংগারচর গ্রামের ডিস লাইনের সংযোগ দেওয়ার কাজ করতেন। তার সহকারী ছিলেন একই গ্রামের জাবেদ হোসেন। আসামিরা গ্রাম্য দলাদলির রেশ ধরে পূর্ব শত্রুতার জেরে সোহেলকে খুন করার উদ্দেশ্যে ঢাকার মিরপুর-১ নম্বর গোল চত্বর থেকে ২০১৭ সালের ৫ মে রাত ৯টার দিকে অপহরণ করে। এরপর তাকে মারাত্মক জখম করে। সোহেল মরে গেছে ভেবে টেংগারচর থেকে আসামিরা সোহেলকে সিএনজিতে করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছিল।

পথিমধ্যে টহল পুলিশের গাড়ির আওয়াজ পেয়ে তড়িঘড়ি করে সোহেলকে জামালদি ব্র্যাক অফিসের পাশে ফেলে আসামিরা দ্রুত পালিয়ে যায়। টহল পুলিশ সোহেলকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে গজারিয়া (ভবেরচর) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া যায়। পরে পুলিশ তার পরিবারকে খবর দেয়। পরিবারের লোকজন হাসপাতালে আসলে তাদের কাছে ঘটনা বলে সোহেল। সেখানকার ডাক্তারের পরামর্শে সোহেলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে নেওয়ার পথে আসামিদের নাম বলে সোহেল। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সোহেল। এ ঘটনায় সোহেলের মা সুফিয়া বেগম ৭ মে গজারিয়া থানায় মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সাব-ইন্সপেক্টর সৈয়দ গোলাম সারোয়ার। ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com