রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:৩৩ অপরাহ্ন

রেমিট্যান্স আহরণে আবারও শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক

অর্থনৈতিক ডেস্ক:: চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে সর্বাধিক রেমিট্যান্স আহরণ করেছে ইসলামী ব্যাংক। একক ব্যাংক হিসেবে আবারও সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরণের দৃষ্টান্ত গড়ল ব্যাংকটি।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে জানা যায়, ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৪৬ কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় পাঁচ হাজার ১১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা (প্র‌তি ডলার ১১০ টাকা হিসাবে)। দেশের অন্য কোনো ব্যাংক এর ধারে কাছেও পৌছাতে পারেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার ইউএস ডলার। বাংলাদেশের মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার ৪৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কো‌টি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং মার্চে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এই তালিকায় পরের অবস্থান ব্র্যাক ব্যাংকের। এই ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আট কোটি ৯৮ লাখ ডলার এবং জনতা ব্যাংকের সাত কোটি ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাপ্তাহিক হিসাবে দেখা যায়, ১ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার, ৬ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার, ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং ২০ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

বাংলাদেশের প্রবাসীদের অধিকাংশই কর্মরত মধ্যপ্রাচ্যে। রেমিটেন্সের সবচেয়ে বড় এই উৎসটি পরিপূর্ণভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে ইসলামী ব্যাংক। যদিও পূর্বে এসব দেশ থেকে বাংলাদেশে আগে টাকা পাঠানোর সহজ, নিরাপদ ও দ্রুত উপায় না থাকায় প্রবাসীগণ অবৈধ উপায়ে প্রিয়জনদের কাছে অর্থ পাঠিয়ে অনেক সময় প্রতারিত হত। ইসলামী ব্যাংক প্রবাসীদের সাথে নিয়মিত মতবিনিময় সভা ও বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মানুষকে বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠাতে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করে।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসীদের রেমিট্যান্স আহরণ ও প্রবাসীদের সেবায় বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে আসছে, যার ফলশ্রুতিতে প্রবাসীরাও আস্থা রেখেছে ব্যাংকটির প্রতি। বর্তমানে ব্যাংকের প্রতিনিধির সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, জর্ডান, সিঙ্গাপুরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসীদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। গত চার দশকে ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি ইসলামী ব্যাংক খাত দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। দেশব্যাপী বিনিয়োগ বহুমুখীকরণের মাধ্যমে সরাসরি ইসলামী ব্যাংকগুলো প্রায় ১ দশমিক ২০ কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। প্রতি বছর ইসলামী ব্যাংকগুলো রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইসলামী ব্যাংকগুলো করপোরেট ট্যাক্স, অগ্রিম আয়কর, ভ্যাট, আবগারি শুল্ক ইত্যাদির আকারে প্রায় ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করেছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিকাশে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এ পর্যন্ত আইবিবিএল এককভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ১২.৫০ বিলিয়ন ডলার জমা করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।

যুক্তরাজ্যের ব্যাংকিং বিষয়ক বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘দি ব্যাংকার’-এর মূল্যায়নে ইসলামী ব্যাংক ২০১২ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০০০ ব্যাংকের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংকরূপে স্থান পেয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় টানা ১২ বার ইসলামী ব্যাংক বিশ্বের শীর্ষ ব্যাংকের তালিকায় রয়েছে। বিশ্বসেরা ইসলামিক ব্যাংক সিবাফি অ্যাওয়ার্ডসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অসংখ্য মর্যাদাপূর্ণ অর্জন রয়েছে এই ব্যাংকটির।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Titans It Solution