মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:: উত্তরের অবহেলিত জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা। ভারী কোন শিল্প কারখানা না থাকায় কৃষি কাজই কৃষকের একমাত্র আশা ভরসা। গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে উপজেলার শত শত বিঘা আমন ক্ষেত মাটিতে নুয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় আমন চাষিদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আগাম শীতকালীন সবজি ও আলু চাষিরা।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই ঝড়ো বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও রাণীশংকৈল উপজেলার প্রায় সহস্র হেক্টর জমির আমন ক্ষেত মাটিতে নুয়ে গেছে। পনেরো দিনের মধ্যেই যে ধান কৃষকের গোলায় উঠত হঠাৎ এই বৃষ্টিতে কৃষকের বুক ভরা স্বপ্ন এক নিমেষেই ভঙ্গ হয়ে গেছে। সেই সাথে আগাম জাতের ধান কেটে জমিতে খর শুকানো ও ধান মাড়াই নিয়ে বিপাকে পড়েছে অনেক কৃষক। এতে এবার আমন মৌসুমে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
উপজেলার ভরনিয়া, রাতোর, কাশিপুর, লেহেম্বা, গোগোর, সিংপাড়া, হোসেনগাঁও সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আধা পাকা ধানের গাছ ও সবজি ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে। অনেক কৃষক তাদের ফসল বাঁচাতে ক্ষেতে জমে থাকা পানির কারণে ধানের শীষ পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় গোছা বেঁধে ধানগাছ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আগাম জাতের ধান কেটে রাখায় তা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।এবার উপজেলায় ২১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।
পাটগ্রামের এলাকার কৃষক মানিক হোসেন বলেন, আর মাত্র দশ থেকে পনেরো দিন পরই ক্ষেতের ধান পাকতে শুরু হতো। কিন্তু হঠাৎ এই বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমাদের ক্ষেতের ৬০-৮০ শতাংশ জমির আমন ধানের গাছ মাটিতে হেলে পড়েছে। কয়েকদিন পরে নুয়ে যাওয়া ধান গাছগুলোতে পোকার আক্রমণ শুরু হবে। পরে ধানের পরিবর্তে শুধু শুষ্ক ছিটা পাওয়া যাবে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব না।
বাজেবকসা এলাকার কৃষক সুমন বলেন, তিন বিঘা জমিতে আগাম ধানীগোল জাতের ধান লাগিয়েছি। মাঠে ধান কেটে রাখছি। দুই একদিন পর ঘরে তুলবো ভেবে মাঠেই রেখে দিয়েছি কিন্তু এমন অসময়ের বৃষ্টিতে পাকা ধান ক্ষেতে পানি জমে গেছে, এতে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছি। ধান তুলতে পারলেও সেসব ধানের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে।
কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়নি। এই নিয়ে কাজ চলছে। তবে পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। বৃষ্টি কমলে কৃষকরা ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। অন্যদিকে যে সব জমির ধানে সবে মাত্র শিষ এসেছে বা বের হয়নি ঐ জমির ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে।এর পাশাপাশি আলু ক্ষেতেও পানি জমে থাকায় আলু চাষিরা সামান্য ক্ষয়-ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।