বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৩১ অপরাহ্ন

রাণীশংকৈলে ইউএনও টেন্ডার ছাড়াই ১৫০ গাছ কাটলেন

রাণীশংকৈলে ইউএনও টেন্ডার ছাড়াই ১৫০ টি গাছ কাটলেন

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাকিবুল হাসান রাণীশংকৈলের ঐতিহ্যবাহী শাল বাগানের ২১ টি বিশাল আকারের শাল গাছ ও প্রাচীন রাম রায় পুকুর পাড়ের প্রায় ১০০ টি বিভিন্ন জাতের বনজ ও ফলদ গাছ কেটে নিয়েছে। এতে উপজেলা জুড়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

দেশের এই ক্রান্তিলগ্নের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, মাইকিং ছাড়াই গাছগুলো কেটে ফেলায় জনমনে চরম সন্দেহের দানা বেঁধেছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে জানা গেছে।

জানা যায়, ঐতিহাসিক রামরায় দিঘিতে কাঠের সিঁড়ি দিয়ে ব্রীজ বানানোর নাম করে প্রায় ১৫ দিন আগে এসব গাছ কাটা হয়েছে। এতোদিন ঘটনাটি গোপনে থাকলেও গত দুদিন ধরে এটির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কিন্তু রাম রায় দিঘিতে গিয়ে ৩০ থেকে ৫০ টি ফারাই করা কাঠের টুকরো ছাড়া আর কিছুই নেই।

এদিকে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে ও গাছগুলো উপজেলা ক্যাম্পাসে না রেখে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আহাম্মদ হোসেন বিপ্লব স-মিলের কাছে একটি জায়গায় রাখা হয়েছে। ওই স মিলের ম্যানেজার রুহুল জানান এগুলো ইউএনও স্যার পাঠিয়েছেন। উপজেলা লেহেম্বা ইউনিয়নে অবস্থিত শাল বাগনটিতে ঘুরে দেখা গেছে ২১ বড় বড় শাল গাছের গোড়াসহ কেটে নিয়ে গেছে।

শাল বাগান এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, শাল বাগান টির গাছ গুলো কেটে কেটে শেষ করে দিয়েছে। ১৮০০ গাছের মধ্যে অর্ধেক গাছও নেই। শেষমেষ ইউএনও স্যার একদিনে ২১ টি গাছ
কেটে নিয়ে গেছে।

ওই এলাকার নুর আলম ও রিপন জানান, গাছগুলো ইউএনও স্যারের নির্দেশে কাটা হয়েছে। তাই আমরা কোন কিছু বলার সাহস পাইনি। কিন্তু সরকারি শাল বাগানের এসব গাছ কাটা ঠিক করেনি। বাগানটি দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই। তারা আরো জানান সাধারণত আমরা জানি সরকারি শালবনের গাছ কাটার প্রয়োজন হলে, টেন্ডার, মাইকিং ও গাছের নাম্বারিং করা হয়। কিন্তু এর কোনটিই করা হয়নি।
লেহেম্বা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) তৌহিদা বেগম মুঠোফোনে জানান, ইউএনও স্যার একটি মহেন্দ্র ট্রাক্টর পাঠিয়ে দিয়ে বলেন, দেখিয়ে দেওয়া ২১ টি গাছ কেটে পাঠিয়ে দাও। আমি মিস্ত্রি দ্বারা কেটে পাঠিয়ে দিয়েছি। এর থেকে বেশি কিছু জানিনা।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে ইউএনও রাকিবুল হাসান জানান, গাছ গুলো মরা গাছ ছিল। বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে গাছগুলো কর্তন করে আমার কার্যলয়ে এনে রাখা হয়েছে। বন বিভাগের গাছ কর্তনের কাগজ দেখতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

উপজেলার চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন বিপ্লব মুঠোফোনে বলেন, এ ব্যাপারে ইউএনও আমাকে কোন কিছুই জানায়নি, আর গাছগুলো আমার স মিলে আছে কিনা আমার জানা নেই নেই।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে টেন্ডার ছাড়াই সরকারি শাল গাছসহ যে কোন গাছ কাটার প্রশ্নই উঠে না। আর সরকারি কর্তনকৃত গাছ পরিষদের বাইরে রাখার কোন নিয়ম নেই।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com