বুধবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৫, ০২:২৯ পূর্বাহ্ন
বশির আহমেদ, বান্দরবান প্রতিনিধি॥
বান্দরবানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মহাপিণ্ড দানের মাধ্যমে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন বান্দরবানে কঠিন চীবর দানোত্তম দানোৎসবের শেষদিনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ড দান করছেন বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা। বান্দরবানে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মহাপিণ্ড দানের মাধ্যমে কঠিন চীবর দানোৎসব সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার সকালে উৎসবের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার থেকে দুই শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু খালি পায়ে সারিবদ্ধভাবে লাইন ধরে মহাপিণ্ড গ্রহণে বের হন।
বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বান্দরবানের পাহাড়ি অধ্যুষিত মধ্যমপাড়া-উজানীপাড়া ঘুরে ঘুরে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারী-পুরুষের কাছ থেকে ছোয়াইং ও পিণ্ডদানের অর্থ গ্রহণ করেন। দীর্ঘ দুই কিলোমিটার পথ পর্যন্ত পাহাড়ি বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা রাস্তার একপাশে প্যান্ডেল টাঙ্গিয়ে সারিবদ্ধভাবে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং, চাল, নগদ টাকা, চীবর, মোমবাতিসহ উৎসবের নানা সামগ্রী ধর্মীয় গুরুদের দান করেন।
পুণ্য লাভের আশায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ভিক্ষুদের পিণ্ডদানের পাশাপাশি নানা প্রকার মিষ্টান্নও দান করেন। এ ছাড়া বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সামনে থাকা বৌদ্ধ মূর্তিকে পূজাও দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নেয় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংসহ পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নেতারা।
বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা জানায়, আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বর্ষাবাসে (উপুস) থাকার পর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় দায়ক-দায়িকারা বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সম্মানে বান্দরবানের বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব পালন করেন। এই উৎসবে পাহাড়িরা চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে নতুন তুলা থেকে চর্কার মাধ্যমে সুতা তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য চীবর কাপড় বুনে ভিক্ষুদের মাঝে চীবর দান করেন। কোনো প্রকার সেলাই ছাড়া তৈরি চীবর কাপড় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিতরণ করা হয় এ উৎসবে।
প্রায় দুই হাজার বছর আগে গৌতম বুদ্ধের মহা পুণ্যবতী নারী বিশাখা দেবী এই কঠিন ব্রতী পালন করে বুদ্ধকে চীবর দান করেছিলেন। সেই থেকে প্রতিবছর বান্দরবানে কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারসহ পাহাড়ের বৌদ্ধ বিহারগুলো ব্যাপক আয়োজনে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দানোৎসব ধর্মীয়ভাবে পালন করে আসছে।