বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৪৫ অপরাহ্ন

বাঘায় আলুর দামে হতাশায় কৃষক, খুচরা বাজারে সুফল মিলছেনা ক্রেতাদের

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি:: ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে হতাশায় চাষিরা। বাজার পরিস্থিতি ঘুরে না দাঁড়ালে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে বলে শঙ্কায় চাষিরা। এদিকে দাম নিয়ে আলু চাষিরা হতাশা হলেও খুচরা বাজারে দামের সুফল পাচ্ছেননা ক্রেতারা।

শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারী) সরেজমিন বাঘা উপজেলার সবজি বাজারে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু জাত ভেদে বিক্রি হচ্ছে, কার্ডিনাল ১৩ থেকে ১৪ টাকা আর দেশী আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে। চাষিদের দাবি, পাইকারি বাজারে যে দামে আলু বিক্রি হচ্ছে তাতে তাদের খরচ উঠছে না। পাইকারি বাজারে জাত ভেদে এখন প্রতিমণ আলু বিক্রি করছেন ২৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দামে। এই হিসেবে প্রতিকেজি আলুর দাম পড়ে সাড়ে ৭ টাকা কেজি। এককেজি গরুর মাংস কিনতে হলে দেড় মণের বেশি আলু বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

খুচরা বাজারে আলু ক্রেতা আজিজুল আলম বলেন, শুনেছি পাইকারি বাজারে আলুর দাম কম। কিন্তু বাজারে এর সুফল পাচ্ছেননা। আর চাষিরা বলছেন বর্তমান বাজার দরে উৎপাদন খরচের অর্ধেক টাকাও উঠছে না। আলুর দাম নিয়ে উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের নীচ পলাশিফতেপুর গ্রামের চাষি হাবলু সেখ বলেন, আলুর দাম এখন নিম্নমুখী। এতে করে কৃষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। মৌসুমের শুরুতেই যদি এমন দশা হয় তবে এরপরও যে কি হবে, তা আল্লাই জানেন। তিনি বলেন, দেড় মণ আলু বিক্রি করেও এক কেজি গরুর মাংস কেনাও যাচ্ছেনা।

উপজেলার চরাঞ্চলের কালিদাশখালি গ্রামের সাহেব আলী বলেন, সাড়ে ৩বিঘা জমিতে ‘কার্ডিনাল জাতের আলুর চাষ করেছেন। সার, বীজ, সেচসহ প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ২৫(পঁচিশ) হাজার টাকা। বিঘায় উৎপাদন হয়েছে ৭০-৭৫ মণ। ফলন ভালো হলেও এবার দাম না পাওয়ায় আমরা খুব হতাশ। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে কৃষক সর্বশান্ত হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এক সময় এক মণ আলু না বেচেই এক কেজি মাংস কেনা যেত। প্রতি মণ আলু বিক্রি করেছেন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ দরে।

বাঘা বাজারের আলু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মোকামেই আলুর দাম কম। গত তিন দিনে আমি প্রায় অর্ধলক্ষ টাকা লোকসান গুনেছি। আমদানি খুব বেশি হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পাইকারি দরে আলু কিনে হাট-বাজারে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন ৩২০ টাকা মণ হিসেবে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে এবার উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। উফশী জাতের আবাদ হয়েছে ১৬০ হেঃ, মোট উৎপাদন- ৩৮৩৭ মে. টন, গড় ফলন- ২৩.৯৮, স্থানীয় (দেশী) জাতের ৩০ হেঃ, মোট উৎপাদন – ৪৫০ মে.টন, গড় ফলন- ১৫ মে.টন/হেঃ। বিঘা প্রতি ২৪০ কেজি বীজ লাগে। আলু ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাই মুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলন হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাঘা উপজেলা কার্যালয়ের কৃষিবিদ শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, হঠাৎ করেই সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় আলুর দাম সামান্য কমেছে। তবে বিদেশে যাঁরা আলু রপ্তানি করেন, তাঁরা কিনতে শুরু করলে এই দাম থাকবেনা। সেই সঙ্গে সংরক্ষণের জন্য হিমাগারগুলো আলু কেনা শুরু করলে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com