শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে চতুর্থ দিন

ফরিদপুর সংবাদদাতা, একুশের কন্ঠ ।।
কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং ভাতা ৩০ হাজার টাকা করার দাবিতে সারা দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে চতুর্থ দিন।

কর্মবিরতির চতুর্থ দিনে বুধবার (২৭ মার্চ) সকাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে কোনও শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কাজ করতে দেখা যায়নি। পাশাপাশি রোগীদের উপচে পড়া ভিড়ের কারণে হাসপাতালের বারান্দায় মেঝেতে রেখে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রেজিস্ট্রার চিকিৎসকদের রোগীদের দেখাসহ ব্যবস্থাপত্র দিতে দেখা গেছে।

পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে শয্যা না পেয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নাড়ুয়া ইউনিয়নের কোনগ্রামের মো. মমিন লস্কর (৮৫)। তিনি হৃরোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার ভোর ৪টায় এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

তার ছেলে মো. নসিরুল হক জানান, ভোরে ডাক্তার একবার দেখেছেন। এরপর আর কেউ খোঁজ খবর নেয়নি। এখন দুপুর হয়ে গেল। বড় ডাক্তার এসেছিলেন কিন্তু তিনি না দেখে চলে গেছেন। মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে অসুস্থ মাকে নিয়ে এসেছেন ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের মৃগী গ্রামের রাজিয়া বেগম। তার মা রাবেয়া বেগমের (৬০) বাম দিক পড়ে গেছে। শয্যা না পেয়ে তার চিকিৎসা চলছে করিডোরে। রাজিয়া বেগম জানান, সকাল ৮টার দিকে মাকে নিয়ে এসেছেন। একবার ডাক্তার দেখেছেন। এর পর আর কোন ডাক্তার দেখেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের কর্মরত এক নার্স জানায়, শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারনে তাদের উপর চাপ বেড়েছে। রোগীদের পেশার মাপাসহ বিভিন্ন কাজ শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা করতেন। সে কাজ এখন তাদের করতে হচ্ছে। পাশাপাশি রেজিস্ট্রার চিকিৎসকদের দায়িত্ব বেড়েছে। আগে রেজিস্ট্রার চিকিৎসকরা রাতে বিভিন্ন ওয়ার্ডে না এলেও এখন দিন ও রাতে তাদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৩৫ থেকে ১৪০ জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক রয়েছে। শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা জানায়, হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা যাতে ব্যহত না হয় এজন্য কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া ৩৬ জন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক নিয়ে একটি জরুরি দল গঠন করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ওয়ার্ডে কিংবা জরুরী বিভাগে রোগীর চাপ বেশি মনে করলে তাদের ডাকা হলে তারা আপদকালীন সময়ের জন্য কাজ করবেন। তবে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কর্মরত নার্সরা জানিয়েছে কর্মবিরতি পালনকালে তারা কোনও শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে কাজ করতে দেখেননি।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ভারপ্রাপ্ত) পরিচালক দীপক কুমার বিশ্বাস জানান, ফরিদপুরে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মবিরতি পালন করছে। তবে হাসপাতালে রোগীদের ভোগান্তি এড়াতে যে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক যে ওয়ার্ডে কর্মরত আছেন সেই ওয়ার্ডের এসিসটেন্স রেজিস্ট্রার কাজ করছেন। তিনি বলেন, এ কর্মবিরতি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় তেমন বাধা হচ্ছে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com