রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলো ভারত

হিলি প্রতিনিধি:: অভ্যন্তরীন বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধ থাকার পর পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ভারত। দেশটিতে লোকসভা নির্বাচন চলছে। এই পর্যায়ে মহারাষ্ট্র অঞ্চলে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর ঠিক আগে এমন ঘোষণা এলো।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, শনিবার (৪ মে) থেকে দেশটির সরকার পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে। যা ভারতের মহারাষ্ট্র ব্যবসায়ীদের জন্য বড় একটি সুখবর।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার মহাপরিচালকের দফতর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব পেঁয়াজের সর্বনিম্ন রফতানি মূল্য (এমইপি) হবে প্রতি টন ৫৫০ ডলার।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকগণ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য আইপি, এলসি খোলাসহ সকল প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার সারঙ্গি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানানো হয়। প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হলে আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হতে পারে। এতে করে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা সেটি কেটে যাবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভারতের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অনিল সরকার পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দীর্ঘ ৫ মাস বন্ধের পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সংশ্লিষ্ট দফতর। আমাদের কাস্টমস কমর্কতারা সেই বিজ্ঞপ্তি দেখুক তারপরে কী কী শর্ত বা কী বিষয় রয়েছে তার ভিত্তিতে পেঁয়াজ রফতানি শুরু হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে পেঁয়াজের এলসি দিতে হবে এরপরে ভারতে লোডিং হবে।’ সেক্ষেত্রে এক থেকে দুদিন সময় লাগতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোবারক হোসেন বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সংকট ও দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে রেখেছিল ভারত। তবে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত এমন খবর শুক্রবার বিকালেই ভারতীয় ব্যবসায়ীদের থেকে শুনতে পেয়েছিলাম। তবে শনিবার সকালে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি হাতে পেয়েছি। প্রতি টন পেঁয়াজ তারা ৫৫০ মার্কিন ডলার মূল্যে রফতানি করবে বলে সেই পত্রে জানানো হয়েছে। যেহেতু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। এখন পেঁয়াজ আমদানি শুরু করতে পেঁয়াজের আইপি নেওয়া ও এলসি খোলাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। যেহেতু শনিবার ব্যাংক ও অফিস বন্ধ, এ কারণে আইপি খোলা যাবে না। সেই সঙ্গে এলসি খোলাও সম্ভব হবে না। রবিবার (৫ মে) অফিস খুললে আইপি নেওয়া ও এলসি খোলা হবে। এরপরেই ভারত থেকে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে প্রভাব পড়বে। দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম একেবারে সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। এখন যেখানে দেশীয় পেঁয়াজ কখনও ৫০ আবার কখনও ৬০ আবার কখনও ৭০ টাকা খেতে হচ্ছে, এটা আর হবে না। ভারতীয় পেঁয়াজ আসা শুরু হলেই এই দাম কমে আসবে।’

প্রসঙ্গত, প্রতি টন পেঁয়াজ দুই থেকে তিনশ মার্কিন ডলার মূল্যে রফতানি করলেও এটি নিরুৎসাহিত করতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর মূল্য বাড়িয়ে ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে ভারত। সেই দামেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করছিলেন আমদানিকারকেরা। পরবর্তীতে বন্যার কারণে পেঁয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে চার মাসের জন্য পেঁয়াজ রফতানি স্থগিত করে ভারত সরকার। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশটি। এরপর থেকেই হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। গত ২৩ মার্চ সেই মেয়াদের সময়সীমা বাড়িয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Titans It Solution