মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার ॥ চড়ুইয়ের সাথে সম্পর্কটা ছেলেবেলার। ঘুমানোর সময় টিনের কোঠরে ওদের দাম্পত্যের খুনসুটি শুনতাম। ভাবতাম আহা সংসার। এরপর প্রায়ই ঘুম ভাঙা সকালে প্রথম গুড মর্নিং জানাতো ওরাই। একুশ শতকে এসে এখনো কেউ কেউ বিশ্বাস করে ঘরে ছোট্ট এ পাখিটির উপস্থিতি বাড়ায় সুখ-শান্তি।
আমি হয়তো তাদের দলেই। তাই ইট কাঠের জঙ্গলে এসেও খুঁজি ঘরআশ্রিত এ পাখিটি। খুব একটা দেখা মেলে না আজকাল। তাকে জিজ্ঞেস করি হ্যাঁ গো তোমার কোন পাখি পছন্দ? আমতা আমতা করে। অন্য অনেকের মতো তারও পাখি নিয়ে ভাবার সময় কই।
আমরা সবাই খুব ব্যস্ত… ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে ডান দিকে কুমিল্লার পাদুয়ার বাজার। এ রুটে চলাচলকারীদের কাছে জায়গাটা ছন্দু হোটেল নামে পরিচিত। হোটেলের সামনে একটি বরই গাছে প্রায় ৯ বছর ধরে সংসার করছে চৌদ্দ থেকে ষোলো সেন্টিমিটার দৈর্ঘের ছোট্ট এ পাখিগুলো।
দোকানদার আখতার হোসেন সোহেল জানান, খাবার জোগাড় করে নিজেরাই। দিলেও খায় না। মানুষের প্রতি ভীষণ রাগ হয়তো। কারণও আছে, যান্ত্রিক সভ্যতা, পরিবেশ দূষণে বিচরণের পরিবেশ ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। টান পড়ছে জীবন-জীবিকার।
ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির গবেষণা বলছে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে চড়ুই। এ জন্য দায়ী মোবাইল টাওয়ারের ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশান (ইএমআর), যা নষ্ট করছে এ পাখির প্রজনন ক্ষমতা। ব্রিটিশ রয়্যাল সোসাইটি ফর দ্য প্রটেকশান অব বার্ড (আরএসপিবি)-এর মতে, ১৯৭০ পরবর্তী ২০ বছরে উপমহাদেশের প্রায় ৯০ শতাংশ চড়ুই মারা গেছে। বর্তমানে পৃথিবীতে ৫০ হাজার জোড়া চড়ুই বেঁচে আছে। যার বড় অংশই মৃত্যুপথযাত্রী। এরা দল বেঁধে থাকে, খুঁটে খুঁটে খায়, ঠোঁট ডুবিয়ে পানি পান, হঠাৎ উড়াল, হঠাৎ আড়াল এত মায়া, এত আদর, আহা জীবন…