মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন

দেশে ৪০ দিনেরও কম জ্বালানি মজুদ রয়েছে!

ই-কণ্ঠ অনলাইন:: ডলার সংকটের কারণে জ্বালানি তেল আমদানি করতে ব্যাংকে ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে না। যার ফলে জ্বালানি তেল আমদানি করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের জ্বালানি মজুদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)।

বিপিসি জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে ৪০ দিনেরও কম জ্বালানি তেল মজুদ রয়েছে। বিপিসি কর্মকর্তারা বলেছেন, যা একটি দেশের জন্য তেলের মজুদ যথেষ্ট নয়।

জ্বালানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিতরণের সমগ্র পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে আজ সোমবার (১৮ জুলাই) প্রধান কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে ডলারের তীব্র ঘাটতির কারণে ব্যাংকগুলো পেট্রোলিয়াম আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলতে পারছে না। গত ৫ জুলাই এবিষয়ে প্রধান কার্যালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

চিঠিতে বলা হয়, বিপিসি মে ও জুন মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার জন্য অনুরোধ করে।

আজকের বৈঠকে বিপিসি কর্মকর্তারা জ্বালানি খরচ কমাতে গাড়ির নম্বর প্লেটের ভিত্তিতে জোড় তারিখে জোড় নম্বরের এবং বিজোড় তারিখে বিজোড় নম্বরের গাড়ি চালানোর প্রস্তাব দিতে পারেন। এমনকি অফিস ও স্কুলের সময় কমানোর কথাও বলতে পারেন তারা।

বিপিসি সূত্র জানিয়েছে, তারা মূলত জ্বালানির চাহিদা কমপক্ষে ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে চাচ্ছেন।

আজকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব, বিপিসি, পেট্রোবাংলা, বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত থাকবেন।

বিপিসি তথ্য অনুসারে, দেশে প্রায় ৪৪ শতাংশ জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত এবং ৪০ শতাংশ পরিবহন খাতে ব্যবহৃত হয়। আর নয় শতাংশ কৃষি খাতে এবং চার শতাংশ শিল্পে ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী- ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে মোট ৪৪.৮ লাখ টন ডিজেল, ৪৩.৫ লাখ টন ফার্নেস অয়েল, ৩.৭ লাখ টন পেট্রোল, ২.৯ লাখ টন অকটেন এবং ২.৩ লাখ টন জেট ফুয়েল ব্যবহৃত হয়েছে।

গত ৫ জুলাই পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জ্বালানি আমদানির জন্য বিপিসিকে সাধারণত সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংকে প্রতি মাসে ১৬-১৭টি এলসি খুলতে হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ওই সব ব্যাংক ডলারের ঘাটতির কারণ দেখিয়ে এলসি খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, যদিও তারা এলসি খুলতে রাজি হয়, তবে তারা একাধিক কিস্তিতে অর্থপ্রদান করছে বা বিলম্বিত করছে। ফলস্বরূপ, স্থানীয় জ্বালানি পরিবেশক এবং আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়েন হচ্ছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিপিসি পর্যাপ্ত সংখ্যক এলসি খুলতে ব্যর্থ হলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।

এবিষয়ে জানতে একাধিকবার বিপিসি চেয়ারম্যান এবিএম আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

রাষ্ট্রায়ত্ত এক ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত ডলার দিতে পারছে না।

বর্তমানে (১৪ জুলাই) দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯.৭০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com