রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১০:০৮ অপরাহ্ন

চরাঞ্চলে মরিচের বাম্পার ফলনে দামে খুশি কৃষকরা

???????

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের উলিপুরে তিস্তার চরাঞ্চলে মরিচ চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষকেরা। বাম্পার ফলনে ও দামে খুশি মরিচ চাষিরা। মরিচের বাজার এখনো অনেক ঝাঁজ রয়েছে।
বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি দেখা যায়।

গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ভরা মৌসুমে মরিচের ভালো দাম পেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছেন মরিচ চাষিরা। প্রতি বছর চাষিরা মরিচের চাষাবাদ করে বদলে দিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাকা। ক্ষেতের মধ্যেই স্থানীয় পাইকারদের কাছে মরিচ বিক্রি করতে পেরে স্বস্তিও পেয়েছেন চরাঞ্চলের চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এবারে সবজি চাষের লক্ষমাত্রা ছিল প্রায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর। যা অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৫০ হেক্টর এর বেশি। এর মধ্যে মরিচ চাষও রয়েছে। এখন পুরোদমে সবজি চাষ হচ্ছে। চরাঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকায় অনেকেই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করেছেন। এর মধ্যে মরিচ চাষে অল্প খরচে অল্প সময়ে বেশি লাভ পাওয়া যায়। এ ছাড়া মাঠ পর্যায়ে মরিচ চাষিদের বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার বজরা, গুনাইগাছ, থেতরাই ও দলদলিয়া ইউনিয়ন তিস্তা নদী দ্বারা বেষ্টিত। গোড়াই পিয়ার, রামনিয়াশা, হোকডাঙ্গা, টিটমা, নাগড়াকুড়া, দড়িকিশোরপুর, মধ্য গোড়াই, কদমতলা, অজুর্ন, বিরহিম, সন্তোষ অভিরাম, সাদুয়া দামারহাট, কর্পূরা, খারিজা লাটশালাসহ অসংখ্য চরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে মরিচের বাম্পার ফলনসহ মরিচের ভালো দাম থাকায় চাষিরা মরিচ ক্ষেতে পরিচর্যা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন, আবার কেউ ক্ষেতের মরিচ তুলছেন, অনেকেই আবার মরিচ বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।

শত শত বিঘা জমিতে প্রচুর পরিমানে মরিচের চাষবাদ করেছেন চাষিরা। যে সকল চাষির নিজস্ব কোন জমি নেই, তারাও অন্যের জমি লিজ (কন্ট্রাক) নিয়ে মরিচসহ নানা ধরনের সবজির চাষ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। তিস্তার চরাঞ্চলের চর গোড়াইপিয়ার এলাকার মরিচ চাষি আসমত মিয়া জানান, প্রায় ৪২ শতক জমিতে উন্নত জাতের মরিচের চারা লাগিয়েছেন। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত খরচ করেছেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা। আরও খরচ হবে প্রায় ১০ হাজার টাকা। মোট খরচ হবে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। এখন মরিচ বাজারে বিক্রি শুরু হয়ে গেছে।

এ পর্যন্ত বাজারে ৫০ মণ মরিচ ২ হাজার টাকা মণ প্রতি বেঁচে আয় হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। আরও মরিচের আশা করছেন প্রায় ৫০ মণের। বাজারদর ভালো থাকলে আরও আয়ের আশা করছেন প্রায় ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা। ব্যায় করার পরও লাভের আশা করছেন প্রায় লক্ষাধিক টাকার। বিভিন্ন চরাঞ্চলে মরিচ চাষিদের মধ্যে আকবর আলী, মোহাম্মদ আলী ও শফিকুল ইসলাম সহ আরও অনেকে জানান, তিস্তার চরাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষাবাদ হয়ে থাকে।

এর মধ্যে মরিচ একটি লাভজনক ফসল। অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করা যায়। গত বছরের তুলনায় এবারে মরিচের বাজার দর ভালো থাকায় দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তারা। স্থানীয় পাইকার (ব্যবসায়ী) আইয়ুব আলী পৌর কাঁচা বাজারের আরতদার বলেন, বর্তমান কাঁচা মরিচের বাজার চরা দামও অনেক ভালো। যারা কাচা মরিচের চাষ করেছেন তারা অনেক লাভবান হয়েছেন। তিনি আরও জানান, এখন কাঁচা মরিচ মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬’শ থেকে ২ হাজার টাকা। যা দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। দাম বেশি থাকলেও বাজারে অনেক চাহিদা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, এবারে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় চরাঞ্চল সহ বিভিন্ন এলাকায় মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। মরিচ চাষে অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করা যায়। বাজারদর ও ভালো আছে। মরিচের ভালো দাম পেয়েও খুশি হয়েছেন চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে মরিচ চাষিদের রোগবালাই সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Titans It Solution