শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন

খুলনায় করোনার মধ্যে ডেঙ্গুর হানা, এক দিনে ভর্তি ৩

খুলনা প্রতিনিধিঃ জুলাইয়ে খুলনা বিভাগ করোনাভাইরাসের ভয়াবহ রূপ দেখেছে। হাসপাতালগুলোতে যেমন ছিল রোগীর চাপ, তেমনি চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হয়েছে। করোনায় মৃত্যুর পাশাপাশি বেড়েছিল শনাক্তও। বর্তমানে সেই প্রভাব কিছুটা কমেছে। তবে হঠাৎ করে ডেঙ্গু হানা দিয়েছে।

সোমবার (০২ আগস্ট) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে দুজন বাগেরহাটের এবং একজন নড়াইলের।

খুমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সজীব (৩২) নামে এক রোগী ভর্তি হয়েছেন। তিনি বাগেরহাট মোড়লগঞ্জের কচুবুনিয়ার দেলোয়ারের ছেলে। এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে একই জেলার রামপাল উপজেলার বাশতলি এলাকার অপুর ছেলে অতিস (৪) ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া রাত ৯টার দিকে নড়াইলের লোগাগড়ার লুটিয়া এলাকার কানু ঘোষের ছেলে লিংকন ঘোষ (১০) ভর্তি হয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সোমবার সকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বাগেরহাটের একজন রোগী ভর্তি ছিল। তিনি ঢাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। তবে পরে কয়জন আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন সেই বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে বলা যাবে।

তিনি বলেন, খুলনায় এখনো ডেঙ্গু প্রভাব বিস্তার করেনি। তবুও আমাদের সকল প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গত বছর ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় বর্তমান ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতাল ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এ বছর সেখানে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে ওই ওয়ার্ড ডেঙ্গু রোগীর জন্য আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না।

তবে হাসপাতালের দুটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। খুমেকের মেডিসিনের একটি ইউনিট আছে এবং চর্ম ও যৌন রোগীদের একটি ওয়ার্ড করার কথা ছিল। এ দুটি স্থানের যে কোনো একটি ডেঙ্গুর ওয়ার্ড তৈরি করার বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১০ শয্যার একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হবে। বৃহস্পতিবার (০৫ আগস্ট) চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করে ডেঙ্গু ওয়ার্ডের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ডা. মো. রবিউল ইসলাম আরও বলেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ মশার মাধ্যমে ছড়ায়। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে মশা কামড় দিয়ে অন্য ব্যক্তিকে কামড়ালে ডেঙ্গু ছড়ায়। এ জন্য মানুষকে সচেতন হতে হবে। মশার লার্ভা ধ্বংস করতে হবে। জমে থাকা বৃষ্টির পানি, বাসা বাড়ির ছাদে ফুলের টবে, বিভিন্ন স্থানে ডাবের খোলা, প্লাস্টিক, ফ্রিজের নিচে জমে থাকা পানি ও মাটির পাত্রে জমে থাকা পানি এবং বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

এদিকে নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। সন্ধ্যার পর মশার যন্ত্রণায় টেকা দায় হয়ে পড়েছে। এমনকি দিনের বেলায়ও মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে এমন অভিযোগ নগরবাসীর। তবে মশার উপদ্রব ঠেকাতে নগরীতে ব্যাপক কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজ।

তিনি বলেন, মশার উপদ্রবরোধে খুলনা সিটি করপোরেশনের কাজ চলমান রয়েছে। কেসিসির ৪৬টি ফগার মেশিন রয়েছে। আরও ২০টি ফগার মেশিনের ওয়ার্ক অর্ডার হয়েছে। প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধন অভিযান চলমান আছে। এ ছাড়া মশা নিধনে আমাদের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলছে। বৃষ্টি হলে কালো তেল স্প্রে করা হচ্ছে। আর সব নালায় লার্ভাসাইট স্প্রে করা হয়েছে। এতে মশার উপদ্রব কমে যাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com