বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন

কানপাকা কোন ঠুনকো রোগ নয় !

অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু : কানপাকা মজিদকে অনেকেরই মনে পড়ে। মনে পড়বে একটি টিভি সিরিয়ালের কারণে। রোগটি সম্পর্কে সাধারণ ধারণাটি মোটেও ঠুনকো কিছু নয়। কান থেকে পানি-পুঁজ পড়ার অভিযোগ থাকে। আর থাকে কানে কম শোনার অভিযোগ।

রোগটি চলতে থাকে মাস-বছর ধরে। এভাবে গোঁফ দেখে বিড়াল চেনার মতো কানপাকা রোগ চেনা যায়। কানপাকা রোগ হচ্ছে মধ্যকর্ণের প্রদাহ। কানের ডাক্তাররা বলবেন, তারা রোগটিকে চেনেন কানের পর্দার অবস্থা দেখে। কান পাকলে কানের পর্দায় একটা স্থায়ী অসামঞ্জস্য তৈরি হয়, খুব সম্ভবত ইতিপূর্বে সংঘটিত মধ্যকর্ণের আকস্মিক প্রদাহের কারণে। অথবা মধ্যকর্ণের ঋণাত্মক বায়ুচাপের কারণে। অথবা সেখানে পানি জমে থাকার কারণে। তারা এ রোগকে ডাকেন সিওএম অর্থাত্ ক্রনিক অটাইটিস মিডিয়া।

জনসমাজে রোগটির ব্যাপকতা কেমন? সক্রিয় এবং অপেক্ষাকৃত নিরুপদ্রব এ দুই ধরনের মিলিয়ে ৪.১ শতাংশ লোক এ রোগে ভোগে। এর মধ্যে ৩.১ শতাংশ রোগীর দুই কানে এবং অন্যদের এক কানে রোগটি দেখা যায়। বাংলাদেশে এই হার ৫-৬ শতাংশ। ১৮ থেকে ৪০ বছরের তুলনায় ৪১ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের আক্রান্তের ঝুঁকি দ্বিগুণ। নিম্নশ্রেণির মানুষের সিওএমের ব্যাপকতা বেশি।

সিওএম কাদের হয় : মূলত বংশগত ও জাতিগত কারণে সিওএম হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আলাস্কার আদিবাসীরা বেশি আক্রান্ত হয়। আবার একই দেশের আদিবাসীদের বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে তারতম্যও দেখা যায়।

উন্নয়নশীল দেশে রোগটির হার বেশি হলেও একেক দেশে একেক রকম। এ রোগের জন্য পরিবেশ যথেষ্ট ভূমিকা পালন করে। শিশুর মা ধূমপায়ী কিনা, সে ডে-কেয়ার সেন্টারে বড় হচ্ছে কিনা, তার সাধারণ স্বাস্থ্য কি রকম— এগুলোও সিওএমের নিয়ামক।

কোন জীবাণু দায়ী : প্রোটিয়াস, স্ট্যাফাইলোকক্কাস, সিউডোমনাস, কোলিফর্ম ব্যাসিলাই, কোরিন ব্যাকটেরিয়াম ডিপথেরি, এসকেরিয়সিয়া কোলাই, স্ট্রেপটোকক্কাস ফিকালিস এ রোগের জন্য দায়ী।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব, অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া বাংলাদেশ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com