বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৫৬ অপরাহ্ন

উয়েফা সুপার কাপ: শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়ল পিএসজি

স্পোর্টস ডেস্ক:: পুরো ম্যাচে পিএসজিকে যেন খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না মাঠে। অথচ শেষ মুহূর্তে অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দুই গোলের ঘাটতি মেটাল ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। এরপর টাইব্রেকারে জয় ছিনিয়ে নিয়ে প্রথমবারের মতো উয়েফা সুপার কাপ জিতে নিল প্যারিস সেন্ট জার্মেই।

বুধবার রাতে ইতালির উদিনে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী এই ম্যাচে ৮৪ মিনিট পর্যন্ত ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল টটেনহ্যাম। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগ মুহূর্তে ম্যাচে সমতা ফেরায় পিএসজি। নির্ধারিত সময় শেষে টাইব্রেকারে গিয়ে ৪-৩ গোলে জয় পায় লুইস এনরিকের দল।

ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী খেলতে থাকে টটেনহ্যাম। ৩৯তম মিনিটে ডাচ ডিফেন্ডার মিকি ফন দে ফেন প্রথম গোল এনে দেন দলকে। বায়ার্ন মিউনিখ থেকে ধারে আসা জোয়াও পালিনিয়ার জোরালো ভলি পোস্টে লেগে ফিরলে, ফিরতি বল জালে পাঠান ফন দে ফেন।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান বাড়ায় ইংলিশ ক্লাবটি। ৪৮তম মিনিটে পেদ্রো পারোর ফ্রি-কিক থেকে হেডে গোল করেন অধিনায়ক ক্রিস্তিয়ান রোমেরো, যিনি সন হিউং-মিনের বিদায়ের পর প্রথমবার অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে আক্রমণে গতি আনে পিএসজি। ৬৫ মিনিটে একবার বল জালে পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল বাতিল হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট আগে দক্ষিণ কোরিয়ান উইঙ্গার লি কাং-ইন দুর্দান্ত নিচু শটে ব্যবধান কমান। আর যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে উসমান দেম্বেলের ক্রসে গন্সালো রামোস হেডে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান।

টাইব্রেকারে পিএসজির প্রথম শট পোস্টে লাগান ভিতিনিয়া। কিন্তু পরের চারটি শটে তারা সফল হয়। অন্যদিকে, টটেনহ্যামের ফন দে ফেনের শট ঠেকান পিএসজির নতুন গোলরক্ষক লুকাহ শুভালিয়ে, আর মাথিয়াস তেল বল বাইরে মেরে বসেন। ফলে ৪-৩ ব্যবধানে ট্রফি তুলে নেয় পিএসজি।

এই জয়ে প্রথম ফরাসি ক্লাব হিসেবে উয়েফা সুপার কাপ জিতল পিএসজি। কয়েক মাস আগেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইন্টার মিলানকে হারিয়ে প্রথমবার ইউরোপের সেরা হয়েছিল দলটি। অপরদিকে, গত মে মাসেই ইউরোপা লিগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে দীর্ঘ ১৭ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়েছিল টটেনহ্যাম। কিন্তু মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে আরেকটি ট্রফির খুব কাছে গিয়েও ব্যর্থ হতে হলো তাদের।

এই ম্যাচটি ছিল টমাস ফ্র্যাঙ্কের অধীনে টটেনহ্যামের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ, এবং রোমেরোর অধিনায়কত্বের সূচনা। তবে উজ্জ্বল সূচনার পর এমন পরাজয় হতাশাজনকই।

ম্যাচজুড়ে ৭৪ শতাংশ বল দখলে রাখলেও প্রথমার্ধে কার্যকর কোনো শট নিতে পারেনি পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে তারা আটটি শট নেয়, যার তিনটি ছিল লক্ষ্যে। টটেনহ্যাম পুরো ম্যাচে ১৩টি শট নেয়, যার পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।

গত মাসে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের নতুন সংস্করণের ফাইনালে চেলসির কাছে ৩-০ গোলে হারার পর, এবার ইংলিশ দলের বিপক্ষে সুপার কাপের মঞ্চে শেষ হাসি হাসল পিএসজি। নাটকীয় প্রত্যাবর্তন, সাহসী বদলি পরিকল্পনা এবং ঠান্ডা মাথার টাইব্রেকার পারফরম্যান্সে ইউরোপের নতুন মরশুম শুরু করল এক ঐতিহাসিক শিরোপা জয়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com