রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
মুজিবুর রহমান বাবু, ই-কণ্ঠ টোয়েন্টিফোর ডটকম ॥ ওয়ানডে ফরমেটে এখন বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দল বাংলাদেশ টানা ৫ সিরিজ জিতে এসেছে জিম্বাবুইয়েতে। তাছাড়া তাদের বিপক্ষে সর্বশেস ১৯ ম্যাচেই জিতেছে টাইগাররা। এজন্য অধিনায়ক তামিম ইকবাল ঘরের মাটিতে জিম্বাবুইয়েকে ভয়ঙ্কর দল হিসেবে মানলেও সিরিজ জয়ের উদ্দেশ্যেই নামবেন। অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মাত্র ২ সিরিজ হেরেছেন তিনি, কিন্তু জিতেছেন ৬টি। এবার সপ্তম সিরিজ জয়ের উদ্দেশ্যেই আজ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দলকে নেতৃত্ব দেবেন তিনি। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে তিন ম্যাচ ওয়ানতে সিরিজের এই প্রথমটি বাংলাদেশ সময় আজ শুক্রবার বেলা সোয়া ১টায় মাঠে গড়াবে।
হাতছানি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেই। সেবার তিন ম্যাচে করতে হতো ১৭৪ রান। তামিম ইকবাল করেছিলেন ১১৭ রান। ফলে এখনও বাকি রয়ে গেছে ৫৭ রান।
তামিম ইকবাল দুর্দান্ত খেলে নিজের মতো করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেইে সিরিজ জিতে নিয়েছিল। ওয়ানডেতে স্বপ্নের ক্রিকেট খেলছে বাংলাদেশ। দুটি এশিয়া কাপের ফাইনাল, একটি বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল, র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার মতো পরাশক্তিকে পেছনে ফেলা, টানা ছয়টি দিপক্ষীয় সিরিজ জয়Ñ মাশরাফি বিন মর্তুজার অধীনে এ সবই দেখেছে বাংলাদেশ। ম্যাজিশিয়ান ম্যাশের হাত ঘুরে নেতৃত্বের আর্মব্যান্ড এখন তামিম ইকবালের বাহুতে। খান সাহেবকে পাল্লায় তোলার সময় হয়নি। সিনিয়রদের উদ্দেশে বিশেষ বার্তা, উইন্ডিজে দাপুটে জয়ে সিরিজ নিশ্চিতের পর শেষ ওয়ানডেতে রিজার্ভ বেঞ্চ বাজিয়ে দেখতে চান অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
১৬ বছরের প্রচেষ্টায় প্রথমবার বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে জিম্বাবুইয়ে। ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের পর অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত জিম্বাবুইয়ে এবার ওয়ানডে সিরিজেও দারুন কিছু করার প্রত্যয়ে নামবে।
গর্বিত অধিনায়ক তামিমের ভাবনাজুড়ে বিশ্বকাপ। সুপার লীগে ১৮ ম্যাচের ১২টি জিতে সরাসরি আগামী বছরের বিশ্বকাপের টিকেট অনেকটাই নিশ্চিত। উইন্ডিজে টানা দুই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ বগলদাবা করা অধিনায়ক ওয়ানডের এই দল নিয়ে গর্বিত। ২০২৩ বিশ্বকাপ সিনিয়রদের জন্য বড় সুযোগ বলে মনে করছেন তিনি। ‘মনে রাখতে হবে এটা (ওয়ানডে) এমন একটা ফরমেট, যেখানে আমাদের গর্ব করার মতো অনেক কিছু আছে।
আমরা এই ফরমেটে অনেক ভাল দল, কোন সন্দেহ নেই। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সাফল্য দারুন। ৭৮ ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে তাদের বিপক্ষে ৫০ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর কোন দলকে এত ম্যাচ কোন ফরমেটেই হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। তাছাড়া টানা ১৯ ওয়ানডেতে জিম্বাবুইয়েকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ কারণে ওয়ানডে সিরিজ মানেই বাড়তি আত্মবিশ্বাস এবং অনেকটাই ভারমুক্ত থাকে টাইগাররা। আর তামিম অধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই যেন আরও অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ দল।
কিন্তু যত ভাল খেলি না কেন, নির্দিষ্ট দিনে সব দিক থেকেই ভাল খেলতে হবেÑ এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সবাই সামনের দিকে তাকিয়ে, শুধু আমি নই, সবাই জাতীয় দলের হয়ে দেশের জন্য খেলছে।’ গর্বের ফরমেটে ঠিকই উড়েছে লাল- সবুজের পতাকা। ৬ ও ৯ উইকেটে জয়ের পথে টানা দুই ম্যাচে উইন্ডিজকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে টাইগাররা। আগামী বছর ভারতে বিশ্বকাপ। এই সিরিজ দিয়ে দল গোছানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে।
তামিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুরের মতো সিনিয়রদের জন্য এটাই হতে পারে শেষ অধ্যায়, ‘২০২৩ বিশ্বকাপ সম্ভবত আমাদের সবার জন্য সবচেয়ে বড় ইভেন্টের একটি হবে। বিশেষ করে আমাদের চারজনের, (আমি, সাকিব, মুশফিক এবং মাহমুদউল্লাহ) যাদের সম্ভবত সেখানেই শেষ হবে (ক্যারিয়ার)। আমাদেও সম্ভাব্য সর্বোত্তম সমন্বয় তৈরি করতে হবে এবং দল নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’ তামিমের নেতৃত্বে এ নিয়ে চলতি বছরই পাঁচটি ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা চতুর্থ সিরিজ জয়। ম্যাচের হিসাবে ফুলমার্ক।
অধিনায়ক তামিম ইকবাল নিজে পারফর্ম করে, দলের নেতা হিসেবে যা করার তাই করেছে। দলের নেতা হিসাবে রান করে, আমাদের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান। কিছু নেতা নেতৃত্ব দেয় নিজের খেলার ধরন দিয়েই। সে পারফরম্যান্স দিয়েই নেতৃত্ব দেয়।”
এর মধ্য দিয়ে ৩১তম দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজে এই সিরিজ দিয়ে তামিমের নেতৃত্বে টানা পঞ্চম সিরিজ জয় করেছে বাংলাদেশ। নেতৃত্বের পাকাপাকি দায়িত্ব পাওয়ার পর ৭ সিরিজের ৬টিতেই জয়ী অধিনায়ক তামিম। সব মিলিয়ে ২৩ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে তার জয় ১৪টি। জয়ের হার এখন ৬০.৮৬, বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের যা সেরা।