বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:১২ পূর্বাহ্ন
জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:: স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের মানসিক নির্যাতন ও মিথ্যা অপবাদ সহ্য করতে না পেরে লালমনিরহাটে এক নবগৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার নাম সুলতানা পারভীন (১৯)।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আকবর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রবিবার (৬ এপ্রিল) আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের বোটঘোড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সে স্থানীয় বেগম কামরুননেসা ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
সুলতানা পারভীন লালমনিরহাট জেলা শহরের জাপান প্রবাসী আশরাফুল ইসলাম অনিকের স্ত্রী। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
আদিতমারী থানা পুলিশ জানায়, আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে আদিতমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ব্যাপারে তার মামা মাসুদ রানা বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
অপবাদ সহ্য করতে না পেরে গৃহবধূর আত্মহত্যা
সুৱতানার মামা মাসুদ রানা জানায়, লালমনিরহাট জেলা শহরের থানা পাড়া এলাকার জাপান প্রবাসী লিটন মিয়ার ছেলে আশরাফুল ইসলাম অনিকের সঙ্গে আমার ভাগিনী সুলতানা পারভীনের প্রায় ১০ মাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সুলতানাকে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেনে নিতে পারছিল না। এরপর শুরু করে তার উপর মানসিক নির্যাতন। বিয়ের এক মাসের মধ্যেই সুলতানা স্বামী অনিক জাপানে চলে যায়। দুইমাস না যেতেই অনিকের পরিবারের সাথে আমার ভাগিনীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা সমমান না হওয়ায় সেখানে অনিকের সংসার না করানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ফন্দি আটতে থাকে। এরমধ্যেই অনিকের পরিবার সুলতানাকে বিভিন্ন ভাবে মানুষিক নির্যাতন করতে থাকে। পরে অনিক তার বোন জামাই পর্তুগাল প্রবাসী মৃদুলকে দিয়ে সুলতানা একটি ছবি এডিটিং করে নোংরা ছবি বানিয়ে অনিকের কাছে পাঠিয়ে দেয়। অনিক সেই নোংরা ছবিটি গত রবিবার সুলতানার কাছে পাঠিয়ে দিলে লজ্জায়, ঘৃনা ও অপমানিত হয়ে নিজ বাড়িতে গলায় ওড়না পেছিয়ে আত্মহত্যা করে।
সুলতানার মামা আরও বলেন, আমার ভাগ্নীকে তারা সেখানে সংসার না করার জন্যই পরিকল্পিত ভাবে আত্মহত্যা করতে তারা বাধ্য করেছে। আমরা মনে করি সুলতানা আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর ন্যায্য বিচার দাবি করছি।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী আকবর জানান, এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের লোকজন থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পরলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।