মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৮:১২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ১৪ দলের বিভিন্ন নেতাসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ২০ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারী) বেশকিছু আসামির উপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে শুনানি করেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
শুনানিতে তিনি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি জাতিসংঘের যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, সেখান থেকে তথ্য তদন্ত প্রতিবেদনে সংযুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। যার কারণে কিছু সময় প্রয়োজন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করে কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে গণশুনানি চলছে। সেখান থেকে প্রাপ্ত বিশেষ কিছু তথ্য যাচাই-বাছাই, ফরেনসিক করার পর প্রয়োজনীয় কাজ সম্পন্ন করে প্রতিবেদনে সংযুক্ত করার জন্য এ সময় প্রয়োজন।
চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, জটিল এসব প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগলেও আমরা চাই সম্পূর্ণ ত্রুটিহীন একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে। তা না হলে জাতির কাছে আমরা দায়বদ্ধ থেকে যাবো। প্রয়োজনীয় তথ্য সংযোজন করতে আরও কম সময়ও লাগতে পারে, তাই আমরা চেষ্টা করব দ্রুত এ প্রতিবেদনটি আদালতের হাতে তুলে দিতে।
মঙ্গলবার শুনানি চলাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্না, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম, বিএম সুলতান মাহমুদ, গাজী এমএইচ তামিম, তারেক আব্দুল্লাহ, শাইখ মাহাদী, আব্দুল্লাহ আল নোমানসহ আরও অনেকে। শুনানি শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্টটিতে উঠে এসেছে যে বাংলাদেশে এক যোগে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত এবং শেখ হাসিনার নির্দেশে করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত হিসেবে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন যেমন ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং সেই সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকার প্রত্যক্ষ প্রমাণ দেয়া হয়েছে। আমাদের মনে হয়েছে তদন্ত রিপোর্টটিকে শক্তিশালী করতে জাতিসংঘের রিপোর্টের তথ্যগুলো এতে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। যে কারণে আমরা জাতিসংঘের কাছে এই প্রমাণগুলো চেয়েছি।
তিনি বলেন, যেহেতু জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক একটি সংঘের দ্বারা পক্ষপাতিত্ব করার সম্ভাবনা নেই, তাই আমরা তাদের কাছে যে প্রমাণগুলোর ভিত্তিতে তারা রিপোর্টটি করেছে সে প্রমাণগুলো চেয়েছি এবং সেগুলো সংগ্রহ করার প্রক্রিয়ায় আছি।
এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।