সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন
ই-কণ্ঠ ডেস্ক রিপোর্ট:: বর্তমানে যেসব গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে, তার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আদালতে যাওয়া-আসার সময় যা হয়, তা সারা দেশ দেখেছে। ২০১৪ সালে যেভাবে পুলিশ হত্যার চেষ্টা হয়েছিল, একইভাবে সেদিন পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। পুলিশের রাইফেল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, রাইফেল ভাঙা হয়েছে। তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এখানে কোনও রাজনীতি নেই। যারা সন্ত্রাসী, তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলনকেন্দ্রে ‘পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ ২০১৮’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সব নাগরিক যখন স্মার্টকার্ড পাবেন, তখন এই অনিয়ম কমে আসবে। ভেরফিকেশনের দরকার হবে না।’ পাসপোর্ট পেতে মানুষের ভোগান্তি আগের চেয়ে অনেক কমেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেরাই নতুন উদ্যমে সেবা দিতে শুরু করছেন। সবাইকে এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) দেওয়া আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেকেই মনে করেছিল, প্রবাসে থাকা আমাদের লাখো শ্রমিককে এমআরপি’র অভাবে চলে আসতে হবে। কিন্তু তা হয়নি। আমরা দুই কোটি এমআরপি দিয়েছি। একটি লোকও এমআরপি’র অভাবে বিদেশ থেকে ফিরে আসেনি।’ পাসপোর্ট নিয়ে কোনও অনিয়ম যেন না হয়, সেজন্য দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে ডাটা শেয়ারিংয়ের ব্যবস্থা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এমআরপি’র পর শিগগিরই ই-পাসপোর্ট যুগে প্রবেশের আশা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের ১১৮টি দেশে ই-পাসপোর্ট চালু রয়েছে। আমরাও শিগগিরই ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন করব। তখন ইমিগ্রেশনে যাত্রীরা সহজে তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।’ মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের আওতায় আনার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, পুলিশ ও পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতার কথা তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা ১০ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা নিবন্ধন করেছি। যাদের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে, তারা কখনও এ দেশে অন্য কোথাও তথ্য গোপন করে ভোটার হতে পারবেন না বা পাসপোর্ট করতে পারবেন না।’ অনুষ্ঠানে পাসপোর্ট অধিদফতরের আগারগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় অফিস ও ঢাকা বিভাগীয় অফিস একই জায়গায় হওয়ায় সেখানে অল্প পরিসরে একদিনে ১০ হাজার নাগরিককে উন্নত সেবা দেওয়ার সীমাবদ্ধতার কথা জানান কর্মকর্তারা। এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘পাসপোর্ট অধিদফতরের জন্য আমরা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে জায়গা চেয়েছি। তারা জায়গা দিতে সম্মত হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
পাসপোর্ট অধিদফতরের জনবল বাড়ানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জনবল বিন্যাসের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছি। সেখান থেকে বিষয়টি অনুমোদন হয়ে এলে এই সমস্যারও সমাধান হবে।’ পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করার কথাও বলেন তিনি।
পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপিরচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুন্সি, সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব ও পাসপোর্ট অধিদফতরের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী।