বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:১৮ অপরাহ্ন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ:: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির লক্ষ্য ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি’ গড়ে তোলা, যা লাখ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া সকালে বার্তায় তারেক রহমান বলেন, এই পরিকল্পনা হবে গণমুখী ও আধুনিক, যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষ করে নারী, দেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে এবং কোনো নারীকে পরিবার ও ভবিষ্যতের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে না।
তারেক রহমান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য তুলে ধরে জানান, দেশে নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ পুরুষদের তুলনায় কম; যেখানে পুরুষদের ৮০ শতাংশ কর্মজীবী, নারীদের সংখ্যা মাত্র ৪৩ শতাংশ। এই বৈষম্যকে তিনি দেশের অগ্রগতিতে বড় বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন।
এ সমস্যা সমাধানে, বিএনপি শিশু পরিচর্যা বা ‘চাইল্ড কেয়ার’-কে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কৌশলের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। তারেক রহমানের প্রস্তাব অনুযায়ী, পরিকল্পনায় রয়েছে:
১। সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন
২। সরকারি অফিসে ধাপে ধাপে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনের জাতীয় নীতি গ্রহণ
৩। বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় বাধ্যতামূলক ডে-কেয়ার ব্যবস্থা
৪। শিশু পরিচর্যার ব্যবস্থা রাখলে নিয়োগকর্তাদের কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান
৫। নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন
তিনি বলেন, এই সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে এবং দেশের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত অবদান রাখতে পারে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।
আইএফসি ও আইএলও-এর গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যে খরচ পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম। তারেক রহমান বলেন, শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়; এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর অপরিহার্য অংশ। নারীর ক্ষমতায়নই ‘বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি’, এবং সমান মজুরি ও নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার মাধ্যমে নারীর সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব।